ইউক্রেন রুশ সামরিক অভিযানের ঠিক এক মাসের মাথায় ন্যাটো সামরিক জোটের নেতারা ব্রাসেলসে আজ (বৃহস্পতিবার) যে শীর্ষ বৈঠকে বসেছেন তাকে জোটের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ বৈঠক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
শুধু ন্যাটো জোট নয়, বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-সেভেনের নেতারাও যোগ দিচ্ছেন।
বৈঠকের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি আশা করছেন যে এই বৈঠক থেকে ইউক্রেনকে সাহায্য করার প্রশ্নে তিনি ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে’ একত্রিত করতে পারবেন। বাইডেন কার্যত ইউরোপীয় দেশগুলোর কথাই বলেছেন।
ব্রাসেলস থেকে বিবিসির সংবাদদাতা নিক বিক বলছেন, এই বৈঠক থেকে প্রধানত এই বার্তা রাশিয়াকে দেয়া হবে যে ন্যাটো জোট শক্তিধর এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে জোটের মধ্যে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই।
ইউক্রেনে সেনা হামলার পেছনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রধান তাড়না ছিল ন্যাটো জোটকে একটি বার্তা দেয়া যে পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার দোরগোড়ায় ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণ, সামরিক তৎপরতা তিনি আর বরদাস্ত করবেন না।
ন্যাটো যে পুতিনের সেই দাবিকে বিন্দুমাত্র গ্রাহ্য করছে না সেই বার্তা বৃহস্পতিবারের বৈঠক থেকে পরিষ্কার করা হবে বলে বলা হয়েছে।
ন্যাটো মহাসচিব ইয়েন স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, আজকের বৈঠক থেকে বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া এবং স্লোভাকিয়ায় ন্যাটো সেনাবহর মোতায়েনের এক প্রস্তাব অনুমোদন করা হবে। সেই সাথে, রাশিয়ার সম্ভাব্য রাসায়নিক-জীবাণু ও পারমাণবিক অস্ত্রের হামলায় ইউক্রেনকে সাহায্যের উপায় নিয়ে কথা হবে।
‘ন্যাটো এবং পশ্চিমা অন্যান্য জোটের পক্ষ থেকে পুতিনকে এই বার্তা দেয়া হবে যে ইউক্রেনে তিনি যা করেছেন তা তিনি ন্যাটোর ৩০টি সদস্য দেশের সাথে করতে পারবে না না,’ বলছেন বিবিসির নিক বিক।
‘কে বন্ধু, কে বিশ্বাসঘাতক তা প্রমাণ হবে’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জেলেনস্কি পশ্চিমা নেতাদের এই বৈঠকে কিয়েভ থেকে ভিডিও লিংকে বক্তব্য দিয়েছেন যেখানে তিনি ন্যাটোর কাছ থেকে অবাধ সামরিক সাহায্য দাবি করেছেন।
রাশিয়ার ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশের মধ্যে মতভেদ রয়েছে যা নিয়ে জেলেনস্কি ক্ষুব্ধ।
ন্যাটো শীর্ষ বৈঠকের আগে এক ভিডিও বার্তায় তিনি হুঁশিয়ারির ভাষায় বলেছেন, ‘এই বৈঠক থেকে প্রমাণিত হবে কে আমাদের বন্ধু, কে আমাদের সহযোগী আর কে পয়সার জন্য আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।’
কিন্তু তার চাহিদামতো রাশিয়ার ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ তা রাজি হবে সেই ইঙ্গিত এখনো নেই। কারণ জোটের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ গতকালও (বুধবার) তেমন নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নাকচ করে বলেছেন, এখনই রুশ জ্বালানির ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে।
Discussion about this post