চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে স্বীকৃত হলেও বিশ্বের ১৯৫টি দেশের মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে বিমান যায় মাত্র পাঁচ দেশে। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত এই বিমানবন্দর ৮১ বছর পার করলেও বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর আকাশে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ডানা মেলতে পারেনি কোন ফ্লাইট। যদিও কারণ হিসেবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুষছেন যাত্রী সংকটকে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ভারত, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কাতার ও সৌদি আরবে সরাসরি ফ্লাইট চালু আছে। যাত্রী সংকটের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে সরাসরি কোন ফ্লাইট চালু করা যাচ্ছে না।
তাদের তথ্যানুসারে, অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতিদিন ৩৪ থেকে ৩৬টি বিমান ওঠানামা করে। অন্যদিকে শুক্র, শনি, রবি ও মঙ্গলবারে আন্তর্জাতিক রুটে ৬ থেকে ৭টি বিমানের ওঠানামা থাকলেও বুধ-বৃহস্পতি পুরোপুরি বন্ধ থাকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলে সপ্তাহে ৪৬ থেকে ৫০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে এ বিমানবন্দর দিয়ে।
সরকারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাশাপাশি বেসরকারি ইউএস বাংলা, নভোএয়ার রিজেন্ট এয়ারওয়েজ চট্টগ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে। যদিও রিজেন্ট এয়ারওয়েজের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে এয়ার এস্ট্রা ও এয়ার বাংলা নামে দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিমান যোগ হতে যাচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান উড়ানোর কথা তাদের।
কর্মকর্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন সমস্যা নেই। তবে সেটা অবশ্যই নির্ভর করে যাত্রীদের চাহিদার উপর। যাত্রী স্বল্পতার কারণে সব দেশে সরাসরি ফ্লাইট চালু করা যায়না। যে দেশে চাহিদা বাড়বে, সে দেশে ফ্লাইট চালু করা যাবে। কুয়েত রুটে চাহিদা থাকায় সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পাওয়া গেছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম থেকে এই রুটে বিমান উড়াবে জাজিরা এয়ারওয়েজ।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন সিভয়েসকে বলেন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কেবল তখনই বাড়ানো যায় যখন যাত্রীর চাহিদা থাকে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের মধ্যে বর্তমানে ভারত, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কাতার ও সৌদি আরবে সরাসরি চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট চালু আছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম-কুয়েত সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে আন্তর্জাতিক রুটে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের খাতায় আরেকটি দেশ যুক্ত হবে। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী সরাসরি সব দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত।
উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত বিমানবন্দরটি শুরুতে চট্টগ্রাম এয়ারফিল্ড নামে পরিচিতি পেলেও পরে এটিকে এম এ হান্নানের নামে নামকরণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৫ সালের ২ এপ্রিল ফের নাম বদলিয়ে এটিকে দরবেশ শাহ আমানতের নামে নামকরণ করে তৎকালীন সরকার। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা থেকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বীকৃতি পায় বিমানবন্দরটি।
Discussion about this post