জাসেদুল ইসলাম : মহামারি করোনার পর বৃহৎ আয়োজনের মধ্যদিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এক্সপো ২০২০ উদ্বোধন হয়েছে । ১৯২টি দেশের সঙ্গে বৃহত্তর এই বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১ অক্টোবর) মেলায় ‘টেকসই উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের দুয়ার খুলেছে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অগ্রগতি, সাফল্য ও বাণিজ্য সম্ভাবনা তুলে ধরতে দ্বিতল বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে রয়েছে ডিসপ্লে সেন্টার। প্যাভিলিয়নের প্রবেশ মুখেই স্থান পেয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু জোন’। যেখানে রাখা হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ তার নানা কর্মকাণ্ডের ভিডিও চিত্র। এ ছাড়া সোশ্যাল ইকোনমিক জোন ও ট্যুরিজম জোন সহ মোট ১০টি জোন করা হয়েছে প্যাভিলিয়নে।
এই দশটি জোনে বাংলাদেশের উপর নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও চিত্র বিরতিহীনভাবে প্রদর্শন করা হবে। প্যাভিলিয়নে পাল তোলা নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে পণ্য প্রদর্শনীর মঞ্চ। রয়েছে ডিজিটাল প্যানেল। এসব ডিজিটাল প্যানেলে দেশীয় পণ্য ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ইতিহাসের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যাতে দশর্নার্থীরা এসব তথ্য সহজেই পেয়ে যান। এতে করে এক্সপো থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী। এসময় সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন আবুধাবিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য সচিব তাপস কান্তি ঘোষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন, এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহতাবুর রহমান নাসির, কেপিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান কালী প্রদীপ চৌধুরী।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, দুবাইয়ের এই এক্সপোতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ শুধু দেশীয় পণ্য প্রদর্শনী নয় বরং বাংলাদেশ যে বিশ্বে কতখানি এগিয়েছে তাও তুলে ধরা হচ্ছে। বিশ্ব দেখছে, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। আজকের বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশের পথে চলছে। আমরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে অনেকাংশে এগিয়েছি। বিশেষ করে ভারত থেকে কিছু কিছু সূচকে এবং পাকিস্তান থেকে প্রায় সব সূচকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, এক্সপোর মাধ্যমে দেশে বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধাগুলো আরো ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। রেমিট্যান্স পাঠানোর পাশাপাশি প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে হবে। ঘর তৈরি, গাড়ি কেনা বিনিয়োগের আওতায় পড়ে না। তবে প্রবাসীরা যদি দেশে কোনো কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেন এবং এতে কারো কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয় সেটাই বিনিয়োগ হিসেবে ধরে নেওয়া যাবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে দেশের নাম প্রচারের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য বিক্রি করার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। দেশীয় পণ্য বিক্রি করা গেলে আলাদাভাবে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হবে।
এদিকে, এক্সপো ঘিরে সংযুক্ত আরব আমিরাত সেজেছে ভিন্নরূপে। মেলায় দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে ‘এক্সপো-২০২০ পাসপোর্ট’ করার সুযোগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাতায়াতের জন্য ১৮টি নির্ধারিত স্থান থেকে বিনামূল্যে গণপরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্বপরিবারে মেলা উপভোগ করতে সরকারি দপ্তরগুলোতে ছয় দিনের ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে।
Discussion about this post