সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অনুমতি ছাড়া এক নারীর ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার দিরহাম জরিমানা করেছে দেশটির আদালত। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ সাড়ে ৬ লাখ টাকারও বেশি।
মূলত গোপনীয়তা ভঙ্গের ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এই রায় দিয়েছে আদালত। রোববার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রাজধানী আবুধাবির ফ্যামিলি, সিভিল ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্লেমস কোর্ট গত বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করে। আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই নারীর ছবি ও ভিডিও একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেন। এতে ওই নারীর মানসিক কষ্টের পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। পরে ভুক্তভোগী ওই নারী ক্ষতিপূরণের মামলা করেন।
এর আগে আবুধাবি ক্রিমিনাল কোর্ট একই অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেন। পরবর্তীতে আপিল আদালতও রায় বহাল রাখে। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি আর কোনো আপিল না করায় রায়টি চূড়ান্ত হয়।
রায়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল সিভিল ট্রানজ্যাকশনস আইনের ২৮২ ধারার উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা আছে, “কেউ যদি অন্যের ক্ষতি করে, সে ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে তা করুক না কেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে অভিযুক্ত ব্যক্তি।”
প্রসঙ্গত, কঠোর গোপনীয়তা আইন ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকারের অবস্থান বেশ দৃঢ়। কারও অনুমতি ছাড়া তার ছবি, ভিডিও, ভয়েস নোট, বার্তা বা স্ক্রিনশট শেয়ার করা দেশটিতে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেইল বা ব্লগ- সবই ইলেকট্রনিক মাধ্যমে পড়ে এবং এসব মাধ্যমে অনুমতি ছাড়া কিছু শেয়ার করলেই তা সাইবার অপরাধ। এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ দিরহাম জরিমানা, কারাদণ্ড এবং বিদেশিদের ক্ষেত্রে দেশ থেকে বহিষ্কারও করা হতে পারে।”
মূলত আমিরাতে মানহানির সংজ্ঞা বেশ বিস্তৃত। কোনো বক্তব্য, লেখা বা ইঙ্গিতে যদি কারও সুনাম বা সামাজিক মর্যাদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়, তা মানহানিকর বলে গণ্য হয়। এমনকি সেই তথ্য সত্য হলেও, যদি তা যুক্তিহীনভাবে প্রকাশ পেয়ে কারও সুনাম নষ্ট করে, তবুও তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।