আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসা মার্কিন বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজের চাকায় (ল্যান্ডিং গিয়ার) মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন বিমানবাহিনী একটি বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সি-১৭ সামরিক উড়োজাহাজটি গত সোমবার কাবুল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় শত শত আফগান বেসামরিক নাগরিক উড়োজাহাজটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে। তারা উড়োজাহাজটিতে ওঠার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এতে সেখানে জটিল ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
মার্কিন বিমানবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, কাবুল বিমানবন্দরে সি-১৭ সামরিক উড়োজাহাজটি ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। তখন উড়োজাহাজটির পাইলট যত দ্রুত সম্ভব কাবুল বিমানবন্দর ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন।
মার্কিন বিমানবাহিনী জানায়, উড়োজাহাজটি কাবুল বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে কাতারের একটি বিমানঘাঁটিতে আসে। সেখানেই উড়োজাহাজটির চাকায় (ল্যান্ডিং গিয়ার) মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। সি-১৭ উড়োজাহাজের চাকায় মানুষের দেহাবশেষ পাওয়ার ঘটনা নিয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছে মার্কিন বিমানবাহিনী।
তালেবানের হাতে গত রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন ঘটে। আফগানিস্তান তালেবানের দখলে যাওয়ার পর দেশটির হাজারো নাগরিক কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করে। তারা আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এতে কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেখানে অন্তত পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
কাবুল বিমানবন্দরে অরাজক পরিস্থিতির নানা ভিডিও ও ছবি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মার্কিন বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজ ঘিরে দৌড়াচ্ছে অনেক আফগান নাগরিক। তাদের কাউকে কাউকে উড়োজাহাজটিতে যেকোনোভাবে ওঠার চেষ্টা করতে দেখা যায়।
অপর একটি ভিডিওতে উড়োজাহাজ আকাশে ওঠার পর তা থেকে অন্তত দুজনকে নিচে পড়তে দেখা যায়।
মার্কিন-সমর্থক আফগানদের নিরাপদে স্থানান্তর করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু এত মানুষ আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে কাবুল বিমানবন্দরে ঢুকে পড়বে, তা যুক্তরাষ্ট্রের ধারণার বাইরে ছিল। এখন এই বিপন্ন আফগান নাগরিকেরা অনেকটা অসহায় হয়ে দেশ ছাড়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছে।
Discussion about this post