শিবলি আল সাদিক: দিন যত বাড়ছে টিকার বিষয়ে ততই অনিশ্চতা ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে প্রবাসীদের। তবে টিকা পাওয়ার যতটুকু নিশ্চয়তা তার পুরোটাই প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের উপর নির্ভর করছে। যদিও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রবাসীদের টিকার ব্যাপারে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে, তবে কবে নাগাদ এই টিকা দেওয়া হবে সে ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে মন্ত্রণালয় থেকে আটকে পড়া প্রবাসীদের নিবন্ধন করতে বলা হলেও কথা বলা হলেও প্রবাসীদের অভিযোগ, তারা অনলাইন নিবন্ধন করতে বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন। অনেকের দাবি এখনও বন্ধ রয়েছে অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া। এই পরিপ্রেক্ষিতে কবে নাগাদ তারা টিকা পাবে তা এখনও অনিশ্চিত।
অন্যদিকে টিকার দাবিতে প্রবাসীরা বিভিন্নস্থানে ইতিমধ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। স্থানীয় সিভিল সার্জন অফিস গুলোতেও বারবার টিকার খোঁজে ভিড় করছেন।
টিকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তায় ভুগছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কুয়েত প্রবাসীরা। গত রমজান মাস ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার ও সৌদি আরব থেকে কয়েক হাজার প্রবাসী ছুটি কাটাতে দেশে আসে।এরইমধ্যে করোনার সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের সাথে আকাশ পথের যোগাযোগ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে আটকা পড়েন । এমন পরিস্থিতে টিকার শর্ত জুড়ে দিয়ে ইউএই সরকার ভারতকে আমিরাতে সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দিলে বাংলাদেশে আটকাপড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য টিকা নেওয়ার বিষয়টি প্রকট হয়ে ওঠে।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, আমিরাত সরকার তাদের দেশে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন তাতে করোনা টিকা ছাড়া প্রবাসীদের দেশটিতে প্রবেশ প্রায় অনিশ্চিত। ফলে দেশে এখন টিকা নেওয়া প্রবাসীদের জন্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, কিছু কিছু প্রবাসী সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে একটি ডোজ টিকা গ্রহণ করলেও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে পারেনি অনেকে। আবার দেশে অবস্থানরত শতকরা ৮০ ভাগ প্রবাসী কোনো টিকাই নিতে পারেননি।
আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবু জাফর এ প্রতিবেদককে জানান, প্রবাসীদের টিকার বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় গুরুত্বসহকারে দেখছেন। টিকা হাতে পেলে কিভাবে কখন তা দেওয়া হবে সে বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। রাষ্ট্রদূত প্রবাসীদের কান কথায় বিভ্রান্ত না হতেও আহবান করেন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফাজলে রাব্বি জানান, টিকা নিয়ে প্রবাসীদের নিবন্ধনের কোন সার্কুলেশন এখনও পায়নি। টিকা হাতে আসার পর বিষয়টি ক্লিয়ার হবে। তবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই ফলাফলের আশাবাদী তারা।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ পরিচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকার অত্যন্ত আন্তরিক প্রবাসীদের নিয়ে। নিবন্ধনের বিষয়টি নিয়ে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। সুরক্ষা অ্যাপস তৈরী হওয়ার পর টিকা হাতে পেলে প্রবাসীদের সমস্যা নিরসন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রবাসীদের নিবন্ধনের সার্কুলারটি বিভ্রান্তমূলক বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই


























