জীবন কখন কোথায় নিয়ে মানুষকে দাঁড় করায় তা বলা মুশকিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে অনেক বাস্তবতাকে মেনে নিতে হয়, যা রূপকথাকেও হার মানায়। তেমনি এক করুণ পরিণতির শিকার নারীর সন্ধান মিললো রাজধানীতে।
অভিজাত পরিবারের সন্তান তিনি। বাবা সাবেক বিচারপতি। তার এক মেয়ে নায়িকা। ছেলেরাও বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন। অথচ ওই নারী রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করছেন। সঙ্গী তার কিশোরী মেয়ে।
ওই নারীর বুকে ঝুলছে প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা, ‘সাহায্যের আবেদন…. আমরা বাঁচতে চাই, আমি পড়াশোনা করতে চাই…. সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন….’
সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেটি ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে মজার টিভি নামের একটি পেজ থেকে। সে ভিডিওতে ওই নারীকে বলতে শোনা গেছে, তার নায়িকা মেয়ের নাম অবনী। তিনি একজন ইয়াবার ডিলারের সঙ্গে থাকেন। তার ছেলের নাম অনিন্দ্য। তিনি চার বছর ধরে পথে পথে ঘুরে ভিক্ষা করছেন।
অভিজাত পোশাক ও মার্জিত ভাষায় কথা বলা ওই নারী কিছুতেই তার বাবার নাম বলতে চাননি। তার কাছে বাবার নাম জানতে চাইলে তিনি জবাবে বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না। আমার জীবন চলে, আমি সারা জীবন না খেয়ে থাকি তারপরও উনার নাম আমার মুখে আসবে না। এতোটা অমানুষ, লাইফ সাপোর্ট থেকে আসার পরও ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করে না তুমি কেমন আছ।
কিন্তু আমি ভিক্ষা করেও আমার বাবার জন্য খাবার পাঠাই। কিছুদিন আগেও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আমি বাবার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছি আল্লাহর কাছে।’
‘আমার সন্তান যাকে আমি এই পেটে ধরেছি, সে অনেক সুন্দরী। আমি সুন্দরী না হলেও আমার মেয়ে অনেক সুন্দরী। সে নায়িকা। আমাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে, চুলের মুঠি ধরে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে’- কাঁদতে কাঁদতে বলেন ওই নারী।
ভিডিওতে তার এসব কথা শুনে আবেগ আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা।
আনুমানিক ষাট ছুঁই ছুঁই বয়সী ওই নারী তার নিজের ও সঙ্গে থাকা মেয়ের নামও বলেননি। কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি নারীর স্বামীর সম্পর্কেও। তবে ভিডিও ধারণকারী সমাজের মানুষের কাছে ওই নারী ও তার মেয়ের জন্য সাহায্যের আবেদন করেছেন। একটি বিকাশ নাম্বারও সেখানে দেয়া হয়েছে এই মা-মেয়েকে অর্থ পাঠানোর জন্য। নাম্বারটি ০১৯৫৬৮৪১৭৮১।
এদিকে অনেকে ভিডিওর নারীর বক্তব্য ও পরিচয় নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন। তাদের একাংশের দাবি, ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত হওয়া জরুরি। হতে পারে বিচারপতির সন্তান ও নায়িকা মা পরিচয় দিয়ে তিনিই মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করছেন অর্থ আয়ের নতুন কৌশল হিসেবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের সুনজর প্রত্যাশা করছেন তারা।
Discussion about this post