বৈধতার পাশাপাশি যে সকল অভিবাসী নিজ দেশে ফিরে যেতে চান সে বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। এছাড়া বাংলাদেশে আটকেপড়া প্রবাসীরা মালয়েশিয়ায় ফেরত আসতে আবারও নতুন করে আবেদনের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
আবেদনের প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ায় ফেরা বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরী হামজা বিন জায়নুদ্দিন। এছাড়া আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। যে সমস্ত অবৈধ অভিবাসী বৈধতার সুযোগ গ্রহণ না করে নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে চান তারা চাইলে ফেরত যেতে পারবেন।
এক্ষেত্রে তাদের পাসপোর্ট, করোনাভাইরাস পরীক্ষা সম্পন্নের রিপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় তথ্যাদিসহ ইমিগ্রেশন বিভাগে আবেদন করার জন্য বলা হয়েছে।
গত বছর ১ আগস্ট থেকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ অবৈধ প্রবাসীদের ফেরাতে ‘ব্যাক ফর গুড (বি-ফোর-জি)’ কর্মসূচির আওতায় সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার কার্যক্রম শুরু করে।
এর মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ ডিসেম্বর। ওই সময় সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে অবৈধ হয়ে পড়া অনেক বাংলাদেশি দেশে ফেরেন। তবে এরপরও দেশটিতে রয়ে গেছেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় যারা এখন অবৈধ হয়ে পড়েছেন। বেশির ভাগ অবৈধ শ্রমিক মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মার্কেটে কাজ করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই অভিযান ও ধরপাকড় চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ‘ব্যাক ফর গুড’ প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর পরই বাদ পড়া ও প্রতারিত অবৈধ কর্মীদের বৈধতা প্রদানে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে প্রস্তাব দেন বাংলাদেশের তৎকালীন হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম। এ নিয়ে তিনি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন কুয়ালালামপুর ত্যাগের আগে। দেশটির সরকারি পর্যায়ে বৈঠকও করেন।
ওই সময় মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। গত আগস্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জরিমানা দিয়ে এসব অবৈধ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দেয় মালয়েশিয়া সরকার।
জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছেন ছাত্র, পর্যটক ও ভ্রমণ ভিসায় গিয়ে অবৈধ হওয়া বিদেশিরা। তবে এ সুযোগ শুধু বাংলাদেশিদের জন্যই নয়, অন্যান্য দেশের অবৈধ হয়ে পড়া নাগরিকরাও এর আওতায় ছিলেন।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক খাইরুল দাজায়মি দাউদ গত আগস্টে কুয়ালালামপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মালয়েশিয়ায় যারা এক বছরের কম সময় অবৈধভাবে বসবাস করছেন, তারা ১ হাজার রিঙ্গিত ও যারা এক বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে বসবাস করছেন তারা ৩ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন।
এক্ষেত্রে জরিমানা দিয়ে বিশেষ পাস (স্পেশাল পাস) সংগ্রহ করতে হবে। এদিকে নভেল করোনায় টানা লকডাউনের কারণে মালয়েশিয়া থেকে ছুটিতে বাংলাদেশে গিয়ে আটকা পড়েছেন। অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু দেশটির সরকারের অনুমতিপত্র না পাওয়ায় তারা ফিরতে পারছেন না।
তারা হতাশা ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন, তাদের মালয়েশিয়া ফেরার অনুমতির আবেদন বারবার রিজেক্ট করা হয়েছে। সাধারণ কর্মীরা উপযুক্ত তথ্য উপাত্ত সহ পুনরায় ইমিগ্রেশন বরাবর আবেদন করা হলে তাদের আবেদন বিশেষ বিবেচনা করা হবে বলে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
জাগো নিউজ
Discussion about this post