ইসলাম ও মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করে ধারাবাহিক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ‘মানসিক পরীক্ষার দরকার’ বলে মন্তব্য করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। গতকাল শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন। খবর এএফপির।
মুসলমানদের প্রতি ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মনোভাবের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এরদোগান বলেন, ‘এমন একজন রাষ্ট্রপ্রধানের বিষয়ে কী বলতে পারেন যিনি ভিন্ন ধর্মগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষের মানুষের প্রতি এমন (বিদ্বেষমূলক) আচরণ করেন। প্রথমত, তার মানসিক পরীক্ষা করা উচিত।
মাক্রোঁর পরিকল্পনা হলো, আগামী ডিসেম্বরে তার সরকার একটি বিল আনবে। যার উদ্দেশ্য হলো-মসজিদে বিদেশি অর্থ আসা নিয়ন্ত্রণ করা এবং ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।
সম্প্রতি ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ধর্ম হিসেবে ইসলাম আজ বিশ্বজুড়ে সংকটে রয়েছে। শুধুমাত্র যে আমাদের দেশেই যে এই ধরনের ঘটনা চোখে পড়ছে তা কিন্তু নয়। তবে আমরা কোনোভাবেই ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে কাউকে আঘাত হানতে দেব না। নতুন করে অভিযান চালিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও পাবলিক সেক্টর থেকে ধর্মকে সরিয়ে দেওয়া হবে। নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য যেসব স্কুল ও মসজিদ বিদেশে থেকে টাকা পায় তাদের ওপর কড়া নজরদারি চলবে।’ তার ওই বক্তব্যের পর মুসলিম বিশ্বের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এরদোগান বলেন, ‘ইসলাম সংকটে বলে মাক্রোঁ যে শুধু ধর্মকে অশ্রদ্ধা করেছেন তাই নয়, খোলাখুলি উসকানিও দিয়েছেন। মাক্রোঁ এসব কথা বলে তাঁর ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। ইসলামের কাঠামো নিয়ে কথা বলার তিনি কে?’
এরদোগান বলেন, ‘মাক্রোঁ যে সব বিষয়ে কিছুই জানেন না, সেই সব বিষয়ে বলার আগে যেন ভালো করে বিষয়টা জেনে নেন। আমরা চাই তিনি দায়িত্বশীল প্রেসিডেন্টের মতো কাজ করুন। ঔপনিবেশিক গভর্নরের মতো নয়।”
মাক্রোঁ ও এরদোগানের সম্পর্ক এমনিতেই খুব ভালো নয়। যেখানেই তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন সেখানেই ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গ্রিসের সঙ্গে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের বিরোধে গ্রিসের পক্ষে দাঁড়িয়েছে ম্যাক্রোঁ। আর্মেনিয়া-আজারবাইজান লড়াইয়ে যেখানে আজারবাইজানের পক্ষে তুরস্ক সেখানে আর্মেনিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট। সূত্র : এএফপি
Discussion about this post