নরওয়ের আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যাল ২০২১’র অ্যাম্বাসেডর বাংলাদেশী তারিকুল

নরওয়ের আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যাল ২০২১ (International Student Festival in Trondheim 2021-ISFiT21, Norway) এর অ্যাম্বাসেডর নিযুক্ত হয়েছেন তুরস্কে পিএইচডি অধ্যয়নরত বাংলাদেশি মেধাবী তরুণ তারিকুল ইসলাম। আগামী ১১ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ নরওয়ের ট্রন্ডহিম (Trondheim) শহরে আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যালটি অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের প্রায় ১০০ টি দেশের ৫০০ জন শিক্ষার্থী উক্ত ফেস্টিভ্যালে যোগদানের সুযোগ পাবে।

এ উপলক্ষে ৩১ আগষ্ট ২০২০ এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার ফলে এই তরুণ ISFiT21 এর এম্বাসেডর হিসাবে নিযুক্ত হলেন।

নিযুক্ত হয়ে জনাব তারিক বলেন, ISFiT’র সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি অত্যান্ত খুশী ও আনন্দিত। এটি বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যাল। আমি বিশ্বাস করি, ISFiT সারা বিশ্বের সমসাময়িক সমস্যা সমূহের সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের জাগিয়ে তুলতে ব্যাপক অবদান রাখছে। নিজের কার্যক্রম আরো সমৃদ্ধ করতে এবং শিক্ষার্থীদের আস্থা অটুট রাখবে আশা করি। শক্তিশালী, ইনসাফ ও শান্তিময় সমাজ নির্মাণে সারা বিশ্বে লিডারশীপ তৈরীতে ISFiT ব্যাপক অবদান রাখার চেষ্টা করছে। আমি বিশ্বাস করি, ISFiT’র সঙ্গী হয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে সমসাময়িক প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন এবং সামাজিক শান্তির পথ প্রশস্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারব।

আন্তর্জাতিক এই স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যালে বিশ্বের সকল দেশের শিক্ষার্থীদেরকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে। আবেদনের সময় ৭-২৭ই সেপ্টম্বর ২০২০। তবে বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি এবং COVID-19 এর প্রাদুর্ভাবের কারণে কেবলমাত্র ইউরোপে বসবাসকারী বাংলাদেশী সহ অন্য অন্য দেশের সকল শিক্ষার্থীরা ফেস্টিভ্যালেটিতে অংশ গ্রহণের সুযোগ পাবে।

ট্রন্ডহিম ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যাল বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যাল। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতি এক বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিশ্বব্যাপী ১০ দিনের ওয়ার্কশপ (প্রায় ১৯টি বিভিন্ন বিষয়), ডিবেট, সংলাপ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সামনে নিজের দেশ ও দেশীয় সংস্কৃতি উপস্থাপন করার সুযোগ রয়েছে। ফেস্টিভ্যালে সাধ্যমত বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ ক্রাইসিস সমূহ তুলে ধরা যায়। এবং সারা বিশ্বের মেধাবী শিক্ষার্থীদের একটা মিলন মেলায় পরিনত হয়। এই মুহুর্তগুলো শিক্ষার্থীদের জীবনের একটা অংশ হয়ে থাকে। ফেস্টিভ্যালে যোগ দেয়ার জন্য যাবতীয় খরচ বাবত ISFiT শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক অবস্থার আলোকে সম্পূর্ণ বা অর্ধ স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।

জনাব তারিকুল ইসলাম নরওয়ের আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যাল ২০১৯ তে অংশ গ্রহণ করার জন্য সম্পূর্ণ স্কলারশিপ সহ মনোনীত হন। তিনি তাতে অংশ গ্রহণ করে এডুকেশান’র ওয়ার্কশপে “বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান” নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশান দেন এবং তিনি “মাইগ্রেশন” এর আলোচনায় ও অংশ নিয়ে রোহিঙ্গা বিষয় কথা বলেন। রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের সরকার ও জনগনের আন্তরিকতা ও বহি বির্শ্বের কার্যকর্ম তুলে ধরেন। এটিকে সমাধানর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। আন্তার্জাতিক এ স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যালে গত বছর ১৪২ টি দেশের ৫২১ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছে।

তারিকুল ISFiT19 এর প্রেসিডেন্ট জনাব টিলার স্টুয়ার্ট ও ISFiT এর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান নরওয়ের স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গবেষক মিস. ক্রিসটিনার সাথে সাক্ষাত করেন। তাদের সাথে বাংলাদেশ ও তুরস্কের স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের কার্যকর্ম নিয়ে কথা বলেন এবং তাদেরকে বাংলাদেশ ও তুরস্কে পরিদর্শনের জন্য দাওয়াত দেন। নরওয়েতে বাংলাদেশের কোন দূতাবাস নাই, তাই তিনি সাধ্যমত বির্শ্বের ৪র্থ ও উইরোপের ২য় এই ধনী দেশের (নরওয়ের) জনগনকে বাংলাদেশ সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

বাংলাদেশি তরুণ গবেষক তারিকুল ইসলাম তুরস্কের সোশ্যাল সাইন্সে পিএইচডি করার পাশাপাশি ইস্তাম্বুলের ইসলামিক ইকোনমিক্স গবেষণা কেন্দ্রে গবেষক হিসাবে কর্মরত আছেন। এবং তুরস্কের নিউ ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক (President) ও BASAT এর ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক (পুরুষ) হিসেবে হিসাবে দায়িত্বরত আছেন

তিনি আন্তর্জাতিক কনফারেন্স, আন্তর্জাতিক ছাত্রদের ফেষ্টিভল, ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রজেক্ট, সামার স্কুলে অংশগ্রহণ ও প্রবন্ধ উপস্থাপনের লক্ষ্যে নরওয়ে, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ভ্যাটিকান সিটি, স্পেন, বুলগেরিয়া, উত্তর সাইপ্রাস দেশসমূহ ভ্রমণ করেন।

তরুণ মেধাবী এই গবেষক স্নাতক (বিএ), স্নাতকোত্তর ও এম.ফিল (M.Phil) সহ মোট ৩টি থিসিস লিখেন। আন্তর্জাতিক জার্নালে ইতোমধ্যে তাঁর দুটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র, ব্লগে তার লিখা প্রকাশিত হয়েছে। তার উল্লেখ যোগ্য গবেষনা হল, সোশ্যাল মিড়িয়া, ইসলামী অর্থনীতির বিবলিওগ্রাফি। এগুলো ছাড়াও আরো কয়েকটি প্রবন্ধ এবং লেখা প্রকাশের পথে রয়েছে। গবেষণার পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থী ও সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চান।

বহু প্রতিভার অধিকারী এই মেধাবী তরুণের বাড়ি ফেনী জেলার সদর উপজেলার দৌলতপুরে।