রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই একের পরে এক রেকর্ড গড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে করেছে।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১ সেপ্টেম্বর দিনের শুরুতে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৩৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৯৪০ কোটি ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ তিন লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে (ডলার ৮৪ টাকা ধরে)।
প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় ধরে মজুত এই বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে প্রায় সাড়ে ৯ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন বৈধপথে রেমিট্যান্স আসছে। এছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণসহায়তা এবং বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট মাসের ২৭ দিনে ১৭২ কোটি ৫৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের পুরো আগস্ট মাসে ১৪৪ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
এছাড়া চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন।
একক মাস হিসেবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
জানা গেছে, গত অর্থবছর রেমিট্যান্সের ওপর ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়তে থাকে। চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরেও রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এরপর থেকেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়তে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত (২০১৯-২০) অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যা এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত অর্থ দেশে আসেনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সে হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৭৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ১৫ হাজার কোটি টাকা।
Discussion about this post