গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে করোনার আরটিপিসিআর পরীক্ষা, ব্লাড ট্রান্সফিউশন ও প্লাজমা সেন্টার বন্ধ করতে বলেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অনুমোদন নেই জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ফোন করে এসব বন্ধ করতে বলেছে। তবে অধিদপ্তরের এ বক্তব্যকে জনস্বার্থবিরোধী ও অবিবেচনাপ্রসূত বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আজ দুপুর ১ টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ফোন করে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালকে জানান, আপনাদের অনুমোদন নাই, এবং আরটিপিসিআর পরীক্ষা, ব্লাড ট্রান্সফিউশন ও প্লাজমা সেন্টার বন্ধ করবেন। কাজ চালু রাখলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরটিপিসিআর ফর কোভিড ১৯ এবং ব্লাড ট্রান্সফিউশন ও প্লাজমা সেন্টারের জন্য আলাদা অনুমতি চেয়ে চিঠি দিতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ বক্তব্যের জবাবে চিঠিতে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল পরিচালকের বক্তব্য জনস্বার্থবিরোধী ও অবিবেচনাপ্রসূত। ওনার বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী । স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দুর্বলতা ইতিপূর্বে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে খোলা চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, গত ১২ আগস্ট জিআর কোভিড ১৯ আরটিপিসিআর পরীক্ষা এবং প্লাজমা সেন্টার কার্যক্রম চালু করার জন্য ই-মেইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে, ৩১ আগস্ট আবারও চিঠি দেন তাঁরা।
চিঠিতে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনি আশা করি অবগত আছেন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” কে স্বাধীনতা উত্তর কালে গণস্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নামকরণ করেন এবং ১৯৭৪ সনে সরাসরি নির্দেশ জারি করে উক্ত প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য প্রায় ৩১ একর জমি হুকুম দখল করিয়ে দিয়েছিলেন। ’ তিনি গণস্বাস্থ্যের নানা কার্যক্রমের কথা চিঠিতে উল্লেখ করেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ মে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী নিবন্ধিত দাতব্য প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল হিসেবে করোনা মহামারি অবস্থায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে দেশের প্রচলিত নিয়মে দক্ষ ও অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ, উন্নতমানের যন্ত্রপাতির সহায়তায় স্বল্প মূল্যে কোভিড ১৯ এর জন্য আরটিপিসিআর পরীক্ষা এবং ব্লাড ট্রান্সফিউশন ও প্লাজমা সেন্টার চালু করতে চান তাঁরা। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছ থেকে যথাযথ সহায়তা এবং দ্রুত অনুমোদন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ ছাড়া মহাপরিচালককে গণস্বাস্থ্যের কার্যক্রম পরিদর্শনের আহ্বানও জানান তিনি।
গণস্বাস্থ্যকে করোনা পরীক্ষা ও প্লাজমা সেন্টার বন্ধ করার বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে কিছু বলতে রাজি হননি।
Discussion about this post