অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই একটি উদ্ধারকারী নৌযান থেকে প্রায় ৪০০ জন শরণার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হলেও এখনও অনিশ্চিত তাদের ভাগ্য। কোনও দেশ ঠাঁই না দেয়ায় এখনও ভূমধ্যসাগরেই ভাসছে তাদের ভবিষ্যৎ।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গত শুক্রবার ব্রিটিশ স্ট্রিট আর্টিস্ট বাংকসির অর্থায়নে চলা উদ্ধারকারী নৌযান লুইজ মিশেল জরুরি বিপদসংকেত পাঠায়। তারা জানায়, সাগর থেকে ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করায় অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই হয়ে গেছে নৌযানটি। ফলে তাদের আর এগোনোর উপায় নেই।
লুইজ মিশেলের ক্রু এবং উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এসব অভিবাসনপ্রত্যাশী বেশ কয়েকদিন থেকেই সাগরে ভাসছিল। তাদের অনেকের শরীরে পোড়া ক্ষত রয়েছে। আর যে নৌকাগুলো থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করা হয়েছে তার একটিতে একজনের মরদেহ রয়েছে।
বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, লুইজ মিশেল উদ্ধার করার আগে তাদের মধ্যে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
জরুরি বিপদসংকেত পাঠানোর পর শনিবার অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই উদ্ধারকারী নৌযান থেকে ৪৯ জনকে ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে নিয়ে গেছে ইতালিয়ান কোস্টগার্ড। এদের মধ্যে ৩২ জন নারী, ১৩ শিশু ও চারজন পুরুষ রয়েছেন। বাকি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে বেশিরভাগকেই লুইজ মিশেল থেকে জার্মান পতাকাবাহী একটি সাহায্যকারী নৌযানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।সি ওয়াচ ৪ নামের ওই নৌযান কর্তৃপক্ষ এক টুইটে জানিয়েছে, লুইজ মিশেলে আর কোনও অতিথি নেই। তবে তাদের লড়াই এখন শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশগুলোকে বিপদে পড়া এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীর জন্য দ্রুত বন্দর উন্মুক্ত করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে দ্রুত ভূস্থলে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউরোপে পাড়ি জমাতে ব্যবহৃত ভূমধ্যসাগরের এই পথটিকে অভিবাসনের সবচেয়ে বিপজ্জনক রুট হিসেবে বর্ণনা করেছে ইউএনএইচসিআর। এই পথে উত্তর আফ্রিকা থেকে রওয়ানা দেয়া প্রতি ছয়জনের একজনই সাগরে প্রাণ হারান। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি শরণার্থী এবং অভিবাসনপ্রত্যাশী আফ্রিকা থেকে ইউরোপ যাওয়ার পথে সাগরে প্রাণ হারিয়েছেন।

























