করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সৌদি আরবের বিভিন্ন কারাগারে আটক ১৫ হাজারেরও বেশি প্রবাসী (নারী-পুরুষ) বাংলাদেশী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রবাসী ডেস্কের সহকারী পরিচালক মো: ফখরুল আলমের তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১ এপ্রিল থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত (পৌনে ৫ মাসেরও বেশি) সৌদি আরবে কারাভোগ শেষে আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন ১৫ হাজার ৩৮৯ জন শ্রমিক। এর মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৭৯১ জন এবং নারী ১ হাজার ৫৯৩ জন।
গতকাল সোমবার বিকেলে জনশক্তি প্রেরণের সাথে জড়িত ও সাবেক বায়রার নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, যারা করোনার কারণে কারাভোগ শেষে দেশে ফেরত এসেছেন এখন তারা কোনো কারণে ফেরত এলেন, সেটি তো আর আমরা বলতে পারব না। হতে পারে তারা কেউ চুরি করে, মালিকের অবহেলায় অথবা বাসা থেকে পালানোর অপরাধে ধরা পড়ে জেলে গিয়েছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা ওই দেশে ধরা পড়ে তাদের সফর জেলে পাঠানো হয়। সেখানে তিন মাস রাখার পর সাজা শেষে সিরিয়াল মোতাবেক উড়োজাহাজের টিকিট ফ্রি পেলে তাদের দেশে পাঠিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। এটিই নিয়ম। যদিও ফেরত আসা নারী ও পুরুষ কমীরা রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিণ ব্যুরোতে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তো নিয়ম মেনেই তাদেরকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। এখন তারা কী কারণে সে দেশে যাওয়ার পর ধরা পড়ল অবশ্যই সেটি আগে তদন্ত হতে হবে। শুধু অভিযোগ দিলেই তো আর হবে না। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমার কাছে এক নারীশ্রমিক দুই দিন আগে ফোন করে বলছে, ‘স্যার আমি থাকতে চাই। কিন্তু মালিক আমাকে রাখতে চাচ্ছে না।’ এখন মালিকের দোষ নাকি শ্রমিকের দোষ সেটি আমরা এখানে বসে কিভাবে বুঝব?
তবে তিনি মনে করেন, যারা করোনার মধ্যে দেশে এসেছেন তাদেরকে মানবিক কারণে আবার বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে সরকার। কারণ এসব শ্রমিক বিদেশ যাওয়ার আগে সরকারের কল্যাণ তহবিলে তিন হাজার টাকা করে জমা দিয়ে গিয়েছিলেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক মো: ফখরুল আলমের সাথে সৌদি আরব থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কারাভোগ শেষে ফেরত আসার কারণ জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ ধরেননি।
Discussion about this post