করনোর ভয়ে দুই হাত জীবাণুমুক্ত করে থানায় বসে ঘুষ নেয় লালমনিরহাট সদর থানার ওসি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে। ভিডিওতে দেখা যায়, লালমনিরহাট সদর থানায় একটি পরিবারিক মামলার আসামি পক্ষের কয়েকজন মামলাটির বাদিকে হেনস্থা করার কৌশল জানতে ওসি মাহফুজ আলমের কাছে এসেছেন। কৌশল হিসেবে ওসির পরামর্শ মোতাবেক তারা মামলাটির বাদির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ও ১০ হাজার টাকা নিয়ে এসেছেন। আলোচনার এক পর্যায়ে ওসি হাত স্যানিটাইজ করে ঘুষের টাকা পকেটে রেখে দেন। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তাকে আরও ঘুষ দিতে বলেন ওসি।
জানা যায়, ভিডিওর ঘটনাটি গতমাসের মাঝামাঝি সময়ের। ভিডিওতে ওসি মাহফুজ বলেন, তোমাদের বাদির তো জামিন হয় নাই। জামিন না হতেই থানায় হাজির হয়ে এজাহার দেয়া হলে তো বেআইনি হবে। জামিনের কাগজসহ এসো, অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে। মামলা না হওয়া পর্যন্ত কোনো ঝামেলা করা যাবে না। ঝামেলা হলে তোমরা প্যাচে পড়ে যাবে।
ঘুষ দাতা: আমরা ঝামেলা করি নাই, করব না। প্রয়োজনে ওদিকে কেউ যাব না।
ওসি মাহফুজ: মামলা এখানে একটা করে দেব, কোর্টেও একটা মামলা করবা এবং চেক ডিজঅনার করবে। এভাবে ঘুরবে (আঙ্গুল ঘুরিয়ে দেখিয়ে দেন), চড়কির মতো ঘুরবে। যারা বুদ্ধিদাতা তারা হেরে যাবে। তোমাকে ঠাণ্ডা মাথায় করতে হবে। গরম করা যাবে না।
ঘুষ দাতা: আস্তে আস্তে করতে হবে। একটা একটা করে। স্যার টাকা আজকে দিব না কি মামলার দিন?
ওসি বললেন, সেটা তোমাদের ব্যাপার।
ঘুষ দাতা: স্যার, আপনাকে কমিটমেন্ট করতে হবে। যেদিন মামলা হবে, সেই দিনই আসামি ধরতে হবে।
ওসি: আসামিরা পুরুষ তো?
এরপর টাকা দেয়ার সময় ঘুষ দাতা বলেন, স্যার, স্যানিটাইজারটা একটু দেন।
এরপর ওসি মাহফুজ কাজ ফেলে স্যানিটাইজার দিয়ে নিজেও হাত রাব করে নেন এবং ঘুষ দাতার হাতেও স্যানিটাইজার দেন।
ঘুষ দাতা এসময় বলেন, স্যার, টাকা থেকেও করোনা ছড়ায়। তদন্ত কর্মকর্তাকে আগে এক হাজার টাকা দিয়েছি স্যার।
এরপর ঘুষ দাতা পকেট থেকে টাকা বের করে টেবিলে রাখলে ওসি মাহফুজ আলম তা নিয়ে প্যান্টের পকেটে রেখে বলেন, টাকা দিয়ে বেশি ছড়াচ্ছে। এখানে কত টাকা দিয়েছ?
ঘুষ দাতা: ১০ হাজার আছে স্যার।
ওসি: ওহ ঠিক আছে। ওকে (মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে) আরো দুই হাজার টাকা দিও।
ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রসঙ্গে ওসি মাহফুজ আলম অস্বীকার করে বলেন, এটি আমার জানা নেই। তবে ফোনে কথা না বলে অফিসে এসে কথা বলতে বলেন।
Discussion about this post