করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘ক্র্যাক ডাউন’ করছে ইতালি।
গত সোমবার একটি ভাড়া করা বিমানে যাওয়া কমপক্ষে ৩৭ জন বাংলাদেশি অবতরণ করেন রোমে। পরীক্ষায় তাদের দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। এরপর মঙ্গলবার বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয় ইতালি। এ ছাড়া সম্প্রতি কাজে ফেরা বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংক্রমণ পাওয়ার পর এলার্ট জারি করেছে তারা। ‘ইতালি ক্র্যাকস ডাউন অন বাংলাদেশ অ্যামিড ভাইরাস কনসার্নস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছে বার্তা সংস্থা এপি। এতে বলা হয়, বুধবার ইতালির রোমে একটি বিমানবন্দরে পৌঁছেন শতাধিক বাংলাদেশি। কিন্তু করোনাভাইরাসের হটস্পটগুলো থেকে ইতালিতে সফর কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
ফলে ওই বাংলাদেশিদের ইতালিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। কাতার এয়ারওয়েজে করে ২০৫ জন যাত্রী এদিন অবতরণ করেন রোমের লিওনার্দো দা ভিঞ্চি বিমানবন্দরে। এই বিমানটি পথে কাতারের দোহা’য় যাত্রাবিরতি করেছিল। এতে যাত্রীদের মধ্যে ১১২ জন বাংলাদেশি ছিলেন। কিন্তু তাদেরকে বিমান থেকে নামতে দেয়া হয় নি। ওই বিমানেই ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকি যাত্রীদের পরীক্ষা করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য উল্লেখ করে এপি লিখেছে, বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী কমপক্ষে এক লাখ ৭২ হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন প্রায় ২২০০। মধ্য জুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালিত প্রধান হাসপাতালগুলো রোগীতে ভরে যায়। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অনেক রোগী আইসিইউ বেড এবং ভেন্টিলেটর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
ওদিকে ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পারাঞ্জা বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে করোনায় আক্রান্ত মানুষকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ইতালি যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা নষ্ট হতে দেবে না। ইউরোপীয়ান স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনারের প্রতি তিনি একটি চিঠি লিখেছেন। তাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক নন এমন ব্যক্তিদের প্রবেশের ক্ষেত্রে পূর্ব সতর্কতামুলক নতুন কঠোর নীতি গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। ওদিকে এ মাসের শুরুর দিকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ১৪টি দেশের ক্ষেত্রে ইউরোপ সফরের যে সবুজ সংকেত দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইতালি।
বুধবারও ইতালিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৩ জন। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় এমিলিও-রোমাগনা এলাকায় কিছু আক্রান্ত রয়েছেন। ইতালির বার্তা সংস্থা এএনএসএ বলেছে, পারমা এলাকায় কমপক্ষে ৪২ জন করোনা আক্রান্ত বলে ওই এলাকাকে গুচ্ছ সংক্রমণ এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সব মিলে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪,৯১৪।
Discussion about this post