বাংলাদেশের সঙ্গে এক সপ্তাহের জন্য বিমান চলাচল নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইতালি। ইতালিগামী বিমানে বাংলাদেশী করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) এ সিদ্ধান্ত নেয় ইতালি সরকার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে ইতালির রাজধানী রোমে যাওয়া একটি ফ্লাইটে ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক’ যাত্রীদের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় দেশটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে ইতালি সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং শেনজেন অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সকল যাত্রীদের জন্য নতুন পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করবে।
এদিকে ইতালি থেকে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম রোমা টুডে জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া ৩৯ জনের শরীরে (গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন) করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। তাই ঢাকা থেকে দেশটিতে যাওয়া যাত্রীদের নিয়ে ইতালি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশের নিয়মিত বিমান যোগাযোগ আগেই বন্ধ হয়ে আছে। তবে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ বিমান সার্ভিসের মাধ্যমে ইতালি গেছেন বেশ কিছু ব্যক্তি।
বাংলাদেশ বিমানের ডিজিএম তাহেরা খন্দকার বলেন, “আমরা এখনো ইতালির সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানি না। তাই চার্টার্ড বিমানগুলোর শিডিউলে কোনো পরিবর্তন নেই। ইতালির সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে পেলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো”।
এর আগে গত সপ্তাহেই রোমের কাছে লাৎজিও অঞ্চলে ঢাকা থেকে আসা সব বাংলাদেশীদের করোনাভাইরাস টেস্ট করানোর জন্য স্পেশাল ডিক্রি জারি করা হয়েছিল।
গত সোমবার ২২৫ জন যাত্রী ঢাকা থেকে ইতালি পৌঁছান এবং এদের মধ্যে পরীক্ষা করে ২১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়।
লাৎজিও’র প্রেসিডেন্ট নিকোলা জিনগারেত্তি তার ডিক্রিতে ৩২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। যদিও এটি নিশ্চিত নয় যে এই সংখ্যা ওই ২১ জনকে সহ গণনা করা হয়েছে কি-না। ডিক্রিতে বলা হয়েছে, ৩২ জন পজিটিভ হওয়া ব্যক্তি বাইরে থেকে এসেছিলেন আর ১৫ জন ইতালিতে তাদের সংস্পর্শে গিয়েছিলেন।এতে বলা হয় বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের দু’সপ্তাহ কোয়ারেন্টিন যথেষ্ট নয়।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইতালিতে ১৪ হাজার ৭০৯ জন করোনাভাইরাস পজিটিভ ব্যক্তি এখন আছেন এবং এর মধ্যে লাৎজিওতে আছেন ৮৭০ জন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৪৫ হাজার বাংলাদেশী ইতালিতে বসবাস করছেন। দেশটিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে।
ইতালিতে থাকা বাংলাদেশী সাংবাদিক মোহাম্মদ ইউসুফ জানিয়েছেন যে গত কয়েকদিনে মোট ৬০ জন বাংলাদেশী করোনাভাইরাস পজিটিভ চিহ্নিত হয়েছেন ইউরোপের এই দেশটিতে পৌঁছানোর পর।
Discussion about this post