কুয়েতের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে আইনজীবী হিসাবে ১৫ বছরেও বেশি সময় ধরে কর্মরত ছিলেন মিশরের নাগরিক হাসান ইব্রাহিম। তিনি সম্প্রতি নিজ দেশ মিশরে ফিরেছেন।
৫৮ বছর বয়সী মিশরীয় ইব্রাহিম বলেন, ভাইরাসটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে পড়ায় কর্মক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমবাজারে অবনতির কারণে ইব্রাহিমের মতো হাজার হাজার বিদেশী কর্মী স্থায়ীভাবে নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। এই সপ্তাহের গত দু’দিনের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার ৯২১ জন প্রবাসী কুয়েত ছেড়ে দেশে ফিরেছেন। যাদের অধিকাংশই মিশরীয় ও ভারতীয়। একইভাবে গত এপ্রিলে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সাত হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিপিনো নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী চাকরিচ্যুত বিদেশী কর্মীরা অধিকাংশই উপসাগরীয় দেশগুলো থেতে নিজ দেশে ফিরে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তর দেশ সৌদি আরবে মোট তিন কোটি ৪৭ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় এক কোটি পাচ লাখ বিদেশী কর্মী রয়েছে। আইসিএল বলছে, জিসিসি দেশগুলোতে সারাবিশ্বের দশ শতাংশের বেশি প্রবাসী থাকে। অন্যদিকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী কর্মসংস্থানের দিক থেকে বিশ্বে যথাক্রমে তৃতীয় ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। প্রবাসী এই শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি ও নিজ দেশের রেমিট্যান্স হার সমৃদ্ধ করে আসছে। তবে, গত কয়েক মাসে করোনা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ থাকায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে প্রায় কয়েক হাজার অভিবাসী কর্মীরা নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। ফিরে আসা বেশিরভাগ প্রবাসী কর্মী হলো ভারতীয়, পাকিস্তানি, মিশরীয় ও ফিলিপিনো।
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ স্কট লিভারমোর বলেছেন, কিছু খাতে প্রবাসী শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতির প্রভাব নিজ নিজ দেশের চাকরির বাজারে পড়বে। যা দেশগুলোতে বেকারত্বের হারে বোঝা সৃষ্টি করতে পারে। কর্মসংস্থান সংকট, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রবাসী কর্মীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এই সংখ্যা সৌদি আরব ও ওমানে জনসংখ্যা চার শতাংশ এবং কাতারে প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।
নয়া দিগন্ত
Discussion about this post