কক্সবাজারের চকরিয়ায় নিজ নামীয় বসতভিটার জমি রেজিষ্টি করে লিখে না দেয়ায় ৮০ বছর বয়সী বয়োবৃদ্ধা মায়ের উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে পাষন্ড ছেলে ও নাতি। খবর পেয়ে নির্যাতন ও বেধম মারধরের শিকার বয়োবৃদ্ধা মাকে হারবাং পুলিশ ও আত্বীয় স্বজনরা ১১দিন পর জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
চকরিয়ায় হারবাং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের জমিদার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। সন্তানের বিচার চাইলেন ৮০ বছর বয়সী মা আছিয়া বেগম। তিনি অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মরহুম লেদু মিয়ার স্ত্রী। তিনিও (আছিয়া বেগম) অবসরপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মী ছিলেন। ছেলে আজিজুল হক আলম (আলম আর্ট) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।এ ঘটনায় মা বাদী হয়ে গত ৯মে’২০ অভিযুক্ত মাদকাসক্ত ছেলে আজিজুল হক আলম ও নাতি ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহসভাপতি মেহেরাজুল হক চৌধুরী ইয়াদকে বিবাদী করে থানায় এজাহার দায়ের করেন।
জানা গেছে, আছিয়া বেগম পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকুরী করতেন এবং মরহুম স্বামী লেদু মিয়া পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। ছেলে আজিজুল হক আলম শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কষ্ট করে বনবিভাগে চাকুরীর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পুত্রের অধীনে মায়ের বসতভিটায় থাকলেও পুত্রকে প্রতি মাসে খোরাকি বাবৎ দিতে হয় ১৫০০ টাকা করে। ছেলেকে মাদক সেবনের জন্যও প্রতিনিয়ত টাকা দিতে হয়।
সর্বশেষ গত ২৬ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মায়ের সম্পত্তি ছেলের নামে লিখে দেয়ার জন্য মাকে শাররীক নির্যাতন শুরু করে ছেলে ও নাতি। লোহার রড, হাতুড়ী দিয়ে মারধরের মাঝেও ছেলের নামে জমি লিখে দেবেননা বলে জানিয়ে দিলে ব্যবহৃত মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে একটি কক্ষের মধ্যে মাকে আটকিয়ে জিম্মি করে রাখে। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে মেয়েসহ আত্বীয়স্বজনরা গত ৭ মে’২০ ইং খবর পান। পরে ৯মে’২০ দুপুরে হারবাং ফাঁড়ি পুলিশের নেতৃত্বে আত্বীয় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে যান। এঘটনায় মা আছিয়া বেগম (৮০) বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
ইতিপূর্বেও মাদক সেবনের টাকার দাবীতে একাধিকবার মারধর করেন। এরপর পূর্বেও মায়ের কাছ থেকে দফায় দফায় ২ ভরি স্বর্ণ বন্ধক দেয়াসহ ১ লাখ ৩৯৫০০ টাকা নিয়েছেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে শালিস বিচারও হয়েছে এবং স্ট্যাম্প দিয়ে স্থানীয় শালিসকারদের মাধ্যমে অঙ্গীকারও দিয়েছেন।
ভূক্তভোগি হতভাগা মা আছিয়া বেগম পাষন্ড অবাধ্য সন্তান ও নাতির দৃষ্টান্তমমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন এবং, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, প্রধান বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা (সিএফ), চট্টগ্রাম অঞ্চলের সিসিএফ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Discussion about this post