জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশের ১ কোটি ৯০ লাখ শিশু। তাদের চার ভাগের এক ভাগের বয়স ৫ বছরের নিচে। জাতিসংঘের এক রিপোর্টে এ কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশে শিশুপুষ্টির জন্যও হুমকি। ২০১৮ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় ৫ বছরের নিচে এমন বয়সী ৫ কোটি ৮৭ লাখ শিশুর বর্ধন হয়নি। আর প্রায় ২ কোটি ৫৯ লাখ শিশু বিকশিত হয়নি। এতে আরো বলা হয়, শিশু ও তরুণরা বেঁচে থাকছে ঠিকই। কিন্তু তাদের মধ্যে খুব সামান্যই বিকাশ বা বৃদ্ধি ঘটছে। এ বছর বাংলাদেশ সরকার ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান’-এর দ্বিতীয় দফা শুরু করতে যাচ্ছে। এতে সবচেয়ে দরিদ্র ও বিপন্নদের প্রয়োজনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে যাতে শিশুদের পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য সেবা সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত করতে এই পরিকল্পনায় প্রয়োজন আরো মনোযোগ ও উৎস বা সম্পদ। বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বহু পরিবার শহরে বস্তিমুখী হচ্ছে। সেখানে তারা গাদাগাদি করে বসবাস করে। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা ও পুষ্টি বিষয়ক সেবার রয়েছে সেখানে ঘাটতি। আছে পুষ্টিকর খাদ্যের ঘাটতি। বিশেষ করে প্রথম এক হাজার দিন তারা শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপদ পানির পর্যাপ্ত সুবিধা পায় না। ‘দ্য স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ডস চিলড্রেন ২০১৯: চিলড্রেন, ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন-গ্রোয়িং ওয়েল ইন এ চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে ইউনিসেফ।
বস্তিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিশুরা নিজেরাই নিজেদের সুরক্ষা করে থাকে। তবে তারা অপুষ্টি, শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, দূষণের কারণ, সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। ওই রিপোর্টের দক্ষিণ এশিয়া সেকশনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, খরা ও আকস্মিক বন্যার মতো জলবায়ু বিষয়ক চরম অবস্থার কারণে কৃষিখাতে বিপুল লোকসান হয়। যেদেশে শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন কৃষির ওপর নির্ভর করে, সেখানে অধিক দরিদ্র পরিবারের শিশুরা অনাহারে ভোগার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া উৎপাদন কমিয়ে দেয়ার কারণেও খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Discussion about this post