মোহাম্মদ এনামুল হক: ড্রাগন ফল একটি ডিম্বাকার ও হালকা মিষ্টিযুক্ত ফল। এ ফলের উপরের আবরণটি দেখতে লাল এবং এর খোসা নরম। ভেতরটা লাল অথবা সাদা রঙের হয়ে থাকে এবং ফলের মধ্যে কালোজিরার মতো ছোট ছোট বীজ আছে। ড্রাগন ফলের গাছ এক ধরনের ক্যাকটাস বা ফণীমনসা প্রজাতীর এবং এ গাছের কোন পাতা নেই। গাছ ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার লম্বা হয়। ড্রাগন ফুলও ‘নাইট কুইন’ ফুলের মতো রাতে ফোটে। ড্রাগন ফুল দেখতেও খুব চমৎকার।
ড্রাগন ফুলকে বলা হয় ‘মুন ফ্লাওয়ার’ বা ‘কুইন অব দ্য নাইট’। এ ফুল থেকেই ডিম্বাকার ড্রাগন ফল গঠিত হয়। Hylocereus undatus হলো ড্রাগনফলের বৈজ্ঞানিক নাম। ড্রাগন ফলের জন্ম দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে। ১০০ বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এ ফলের বীজ ভিয়েতনামে নিয়ে আসা হয়। ভিয়েতনাম থেকেই থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া, ইনোনেশিয়া ও অষ্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশে ড্রাগন ফলের চাষ হতে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে ড্রাগন ফল আমদানি করে থাকে।
২০০৭ সাল থেকে আমাদের দেশেও বিভিন্ন জেলায় এ ফলের চাষ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকার সাভার, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে ড্রাগন ফলের চাষ করা হচ্ছে। তবে পাহাড়ী অঞ্চলে এ ফলের ফলন ভালো হয় বলে জানিয়েছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানীগণ। এ ফলের নাম ড্রাগন রাখা হলো কেন? ড্রাগন হলো একটি কাল্পনিক ভয়ংকর প্রাণী। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, চীন, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশের রূপকথায় এ প্রাণীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এসব দেশের মানুষ মনে করতো ড্রাগন মুখ দিয়ে আগুন বের করতে পারতো।
কল্পনার তুলিতে তারা ড্রাগনের একটি অবয়ব দাঁড় করায়। যা দেখলে সত্যি ভয়ংকর মনে হয়। সেই ড্রাগনের পিঠের কাঁটার মতোই ড্রাগন গাছ ও ফলের কাঁটার কিছুটা মিল থাকায় এই ফলের নাম রাখা হয় ড্রাগন ফল। ড্রাগন ফলের রয়েছে অনেক উপকারিতা। এ ফলে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং ভিটামিন সি’র পরিমাণ অনেক বেশি। এ ফল ডায়াবেটিস রোগ নিবারণে বেশ উপকারী। ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর ফাইবার যা পেটের পীড়া এবং লিভার এর জন্য ভালো। ড্রাগন ফল কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
Discussion about this post