ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ পাচ্ছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হতদরিদ্র, দিনমজুর ও প্রান্তিক কৃষকরা।
উত্তর বরইয়া গ্রামের বাসিন্দা নাসিমা আক্তার জানান, দুদিন ধরে তিনি তার ছেলের বউ ও দুই নাতিকে নিয়ে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। এখনও পর্যন্ত সরকারি সহায়তা পাননি। আকাশে মেঘ দেখলেই এখন ভয় লাগে, কখন বাঁধ ভেঙে আবার সব ডুবে যাবে। হঠাৎ পানি ঢুকে সব শেষ হয়ে গেছে।বন্যায় ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, গ্রামীণ সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাঁধ ভাঙনের স্থান পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাঞ্চল কুমিল্লার প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল লতিফ। তিনি জানান, ভাঙন মেরামতের নির্দেশনা পেয়েছেন, দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর দুই জায়গায় বাঁধ ভেঙে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় দুদিন ধরে প্লাবিত থাকে ফুলগাজীর বিস্তীর্ণ জনপদ।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এখনো বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। মৎস্য বিভাগ, কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগ বন্যা-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির জরিপ চালাচ্ছে।স্থানীয়রা বলেন, আমাদের দাবিকে পুঁজি করে বাঁধ ভাঙাগড়ার ব্যবসা করে ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রতিবছর জুন-জুলাই এলেই বন্যার পানিতে ডুবে যেতে হয় আমাদের। শুকনো খাবারের দরকার নেই, টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার জানান, মুহুরী নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভাঙন মেরামতের জন্য জিও ব্যাগ আনা হয়েছে এবং কাজ শুরু হয়েছে।
Discussion about this post