পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এক বছর স্থায়ী হলে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়বে এয়ার ইন্ডিয়া। এ লোকসানের জন্য সরকারের কাছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়েছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (২ মে) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলার জেরে পাকিস্তান পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যাত্রাপথ দীর্ঘ হয়েছে।
রয়টার্সের দেখা বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ে বিমান সংস্থাটির পাঠানো একটি চিঠি অনুসারে, ২৭ এপ্রিল এয়ার ইন্ডিয়া ভারত সরকারের কাছে এ অর্থনৈতিক ক্ষতির অনুপাতে ভর্তুকি চেয়েছে। সংস্থাটির অনুমান অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী হলে বছরে প্রায় ৫৯১ মিলিয়ন ডলারের বেশি লোকসান গুনতে হবে।
চিঠিতে সংস্থাটি বলেছে, ‘ক্ষতিগ্রস্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর জন্য ভর্তুকি একটি ভালো, নির্ভরযোগ্য ও ন্যায্য সমাধান। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ভর্তুকি প্রত্যাহার করে নেয়া যেতে পারে।’
তবে এয়ার ইন্ডিয়া এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ভারতের সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়ও মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
বিষয়টির সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারত সরকার এয়ার ইন্ডিয়ার নির্বাহীদের ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর ওপর আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মূল্যায়ন করতে বলার পরেই চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল।
এয়ার ইন্ডিয়া ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ফ্লাইট পরিচালনা করে। এসব ফ্লাইট অধিকাংশ সময়ই পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করত। প্রধান স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্ডিগোর চেয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার দূরপাল্লার রুটে ফ্লাইটের সংখ্যা অনেক বেশি।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আরো তিনজন ব্যক্তি জানান, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধের ফলে বিমান সংস্থাগুলোর ওপর যে ক্ষতি হচ্ছে তা কমাতে ভারত সরকার বিকল্প বিবেচনা করছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্ভাব্য সমাধান বের করতে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করেছে। এর মধ্যে চীনের কাছাকাছি দুর্গম অঞ্চল দিয়ে বিমান চালনা এবং কিছু ক্ষেত্রে করছাড়ের মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় রয়েছে।
চিঠিতে এয়ার ইন্ডিয়া কিছু আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতির বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে সরকারকে অনুরোধ করেছে।
এছাড়াও দীর্ঘ ভ্রমণ সময়ের বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দূরপাল্লার ফ্লাইটগুলোতে অতিরিক্ত পাইলট নেয়ার অনুমোদন চেয়েছে সংস্থাটি।
Discussion about this post