ওয়াকফ আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে। কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য কৃষকরা যেভাবে কেন্দ্রকে বাধ্য করেছিল, আমরাও তাই করব। শনিবার দারুসসালামে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন জনসমাগমে এমনটাই মন্তব্য করেন হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে ওয়াইসি বলেন, তিনি বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের পায়ের ধুলোরও যোগ্য নন। ওয়াকফ আইন পাস হতে না হতেই উত্তর প্রদেশের ৫০০টি ওয়াকফ সম্পত্তিকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে যোগী আদিত্যনাথ। নতুন আইনের পরিণতি ইতোমধ্যেই স্পষ্ট। যোগী রাজ্যকে দিয়ে এই ঘটনার ফিতে কাটা হয়ে গেছে। তাই এই আইন বাতিল করতে কৃষক আন্দোলনের পথ অনুসরণ করে দীর্ঘ লড়াই চালাতে হবে। সেটা না হলে দেশে মুসলিমদের অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে।
ওয়াইসি আরো বলেন, তিন তালাক, সিএএ, ইউএপিএ, ইউসিসি ইত্যাদি মুসলিম সমাজের উপর ধারাবাহিকভাবে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যদিও এআইএমআইএম সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিয়েছে। তবে তারা সেই রায়গুলোকে অখণ্ড বা নির্ভুল মনে করে না। ‘হিন্দু খাতরে মেইন হেইন’ বলে যারা ধর্মীয় যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে, তারা মুখেই সংবিধানের কথা বলে। আদতে তা মানে না। তবে আমরা সাংবিধানিক নৈতিকতা মানি বলেই রায়ের প্রতি সম্মান দেখাই।
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানিয়ে তিন তালাক এবং বাবরি মসজিদের সময় আমরা চুপ ছিলাম। কিন্ত আর না। ওয়াকফ আইন আমরা মেনে নেব না। এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। ভারতের সৌন্দর্য নরেন্দ্র মোদির মধ্যে নয়। বরং এই দেশের মন্দির, মসজিদ, দরগা এবং জনগণের ভ্রাতৃত্বে নিহিত। যারা এগুলোকে দুর্বল করছে, তারাই আসলে দেশকে দুর্বল করছে।
এদিন বোহরা সম্প্রদায়কে নিয়েও মন্তব্য করেন ওয়াইসি। জানান, ওয়াকফ বিলকে আইনে পরিণত করার দিন মোদির সাথে বোহরা সম্প্রদায়ের মানুষরা সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী এদের সমর্থনে লাফালাফি করছে। অথচ বোহরা সম্প্রদায়ের মানুষরা এই আইনের আওতায় পড়ে না। ওয়াকফ আইনের সাথে ওদের কোনো লেনদেন নেয়। আত্মমর্যাদা ছাড়া জীবিত দেহও লাশের মতো। যারা মোদি সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়ে এই আইনকে সমর্থন করছে, তারা যেন মনে রাখে, মৃত্যুর পরে তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা আল্লাহর অনুসারী ছিলেন, নাকি মোদির।
এদিনের সভা থেকে মুসলিম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন হায়দরাবাদের সাংসদ। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের দেখে শিক্ষা গ্রহণের কথাও জানিয়েছেন। অন্য ধর্মাবলম্বীদের দৃষ্টান্ত টেনে ওয়াইসি বোঝান, যেভাবে হিন্দুদের জন্য এন্ডোমেন্ট অ্যাক্ট বা শিখদের জন্য গুরদোয়ারা কমিটি কাজ করে, তেমনভাবেই ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনাও স্বতন্ত্র নীতিতে হওয়া উচিত।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের চেয়ারম্যান মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এই আইন বাতিল না হলে শরিয়তের রক্ষাও সম্ভব হবে না। অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআরসিপি, তামিলনাড়ুর ডিএমকে-সহ বহু রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা, ধর্মীয় পণ্ডিত এবং বিশিষ্টজনেরা
Discussion about this post