পরম করুণাময় দয়ালু মহান আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা । যিনি মাহে রমজানকে বিশাল ফজিলত দান করেছেন । যেনো আমরা অফুরন্ত কল্যাণ ও ইহসান লাভ করতে পারি । তিনি খুলে রাখেন জান্নাতের দরজা সমূহ ।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, সম্মানিত রসুল মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহর বান্দা ও শেষ নবী ।
হে ঈমানদারগণ ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনটি ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের উপর । যেনো তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো ।”
সূরা আল বাক্বারা ১৮৩
প্রিয় ভায়েরা ! সূদীর্ঘ ১১ মাস পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করে আছি এই মাহে রমজানের জন্য ।
মহানবী সাঃ মাহে রমজানকে স্বাগতম জানাতে গিয়ে বলেন “ তোমাদের কাছে মাহে রমজান সমাগত । বরকতময় মাস । আল্লাহ এ মাসে তোমাদের উপর রোজা ফরজ করেছেন । এ মাসে আকাশের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয় । জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় । শয়তানদের বন্দী করে রাখা হয় ।”
ছহীহুল জামে ৫৫
এ মাসটি বড়ই উপকারী তাদের জন্য, যারা আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করে । আত্মা পরিশুদ্ধির চেষ্টা করে ।
মহানবী সাঃ বলেছেন “ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আকৃতি ও সম্পদের দিকে তাকান না । বরং তিনি তাকান তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে ।”
ছহীহুল জামে ১৮৬২
প্রিয় রসুল সাঃ আরো বলেন “ দেহের মধ্যে এক টুকরো মাংস থাকে । সেটা ঠিক থাকলে দেহটাই ঠিক থাকে । পক্ষান্তরে সেটা নষ্ট হয়ে গেলে পুরো দেহটাই নষ্ট হয়ে যায় । সেই টুকরোটির নাম হৃৎপিণ্ড ।”
ছহীহুল বোখারি ৫২
ছহীহ মুসলিম ১৫৯৯
প্রিয় মুসল্লীগণ ! রুটিন করে পরিবারকে নিয়ে ইবাদতে মনযোগ দিন । ফজরের নামাজ সহ সব নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করুন ।
নবীজী সাঃ বলেন “ আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন । যে ব্যক্তি যথাসময়ে সুন্দরভাবে ওযু করে মনযোগ সহকারে নামাজগুলো সম্পাদন করবে, তাঁর সঙ্গে আল্লাহর ওয়াদা হলো তাকে ক্ষমা করে দেয়া ।”
সুনানে আবু দাউদ ৪২৫
মাহে রমজানে অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করুন ।
আল্লাহ বলেন “ এই মাহে রমজানে কুরআন নাজিল করা হয় । এটা মানবজাতির জন্য হেদায়েত ও হেদায়েতের দলীল এবং সত্য মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য নিরুপণকারী ।
সূরা আল বাক্বারা ১৮৫
এ মাসে বেশী বেশী দোয়া করুন । আল্লাহ বলেন “ তোমরা আমাকে সরাসরি ডাকো । আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো ।”
সূরা গাফির ৬০
রোজা রাখা অবস্থায় দোয়া করতে থাকুন । তিন শ্রেণীর মানুষের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয়না । তন্মধ্য এক শ্রেণী হচ্ছে রোজাদারের দোয়া ।”
সুনানে তিরমিজি ৩৫৯৮
শেষ রাত্রে আল্লাহর কাছে ইসতেগফার করুন । এদের প্রশংসা করতে গিয়ে আল্লাহ বলেছেন “ সেহরীর সময়ে ক্ষমাপ্রার্থীরা ।”
সূরা আল ইমরান ১৭
বিশ্বনবী সাঃ বলেছেন “ একটি খেজুরের অর্ধেক দান করে হলেও নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো ।”
ছহীহুল বোখারি ৬৫৪০
অর্থাৎ কম হলেও তবুও সাদাকা করতে পিছপা হবেনা ।
মহানবী সাঃ বলেছেন “ যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে, একটি পূর্ণাঙ্গ রোজার ছওয়াব তাঁর আমলনামায় যোগ করা হবে । যাকে ইফতার করানো হলো তার কাছ থেকে ছওয়াব কেটে নয় । “
সুনানে তিরমিজি ৮০৭
সুনানে ইবনে মাজাহ ১৭৪৬
ছহীহ ইবনে হিব্বান ২১৬/৮
ছহীহুল জামে ৬৪১৫
শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহঃ হাদিসটিকে ছহীহ বলেছেন ।
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেছেন “ এখানে ইফতার করানোর অর্থ পেট ভরে খাওয়ানো । পক্ষান্তরে এক গ্লাস পানি দেয়া হলে তা’ এ হাদিসে ঘোষিত ছওয়াব পাওয়া যাবেনা ।”
الأختيارات ١٩٤
নিজের আমলনামায় একটি পূর্ণাঙ্গ রোজার ছওয়াব লাভ করতে হলে একটি বিরিয়ানি দ্বারা ইফতার করাবেন ।
যতো জনকে ইফতার করাবেন, ততোটা রোজার ছওয়াব লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ ।
আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নয়নে এগিয়ে যান । মহানবী সাঃ বলেছেন “ সম্পর্ক আছে বলেই সম্পর্ক ধরে রাখার নাম আত্মীয়তা নয় । বরং প্রকৃত আত্মীয়তা হলো যে ব্যক্তি সম্পর্ক রাখতে চায়না, তার সংগে সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টা করা ।”
ছহীহুল বোখারি ৫৯৯১
সংযুক্ত আরব আমিরাত এই ব্যানারে মাহে রমজান পালন করতে চায় যে, “ আমরা সবাই শিক্ষক এবং আমরা সবাই শিক্ষানবিশ ।” এটাই হোক আমাদের শ্লোগান “ আমিরাত পড়ছে “ । পড়াশোনার প্রতি অধিক আগ্রহ সৃষ্টি করাই এ শ্লোগানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ।
আল্লাহ বলেন “ আল্লাহ তোমাদের মধ্যে ঈমানদার ও জ্ঞানীদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে থাকেন ।”
সূরা আল মুজাদালাহ ১১
ইয়া আল্লাহ ! আমাদেরকে আসন্ন এই মাহে রমজানের সমস্ত রোজা সুন্দরভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন । মাহে রমজানের ওসীলায় আমাদের গুনাহ মাফ করুন ।
আমাদের মা বাবাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং তাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন । আমিন ।
Discussion about this post