নোয়াখালীতে বিএনপির জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর মিষ্টি বিতরণকে কেন্দ্র করে দলের দুটি পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কটি ককটেল বিস্ফোরণও হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ভাঙচুর করা হয়েছে ২টি দোকান ও একটি মোটরসাইকেল।
খবর প্রথম আলোর।
গতকাল রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের খলিফার হাটবাজারে এসব ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ ইউসুফ (৩৫) নামের একজনকে রাতে জেলা সদরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিএনপির নোয়াখালী জেলা শাখার বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দাদপুর ইউনিয়নের খলিফার হাট বাজারে মিষ্টি বিতরণ করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। মিষ্টি বিতরণ নিয়ে বিএনপির উপজেলা শাখার সহসভাপতি নুরুল আমিন ও যুবদলের সদর উপজেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের সমর্থকেরা প্রথমে তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়। পরে ২ পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এক পক্ষের নেতা-কর্মীদের অন্য পক্ষকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। উভয় পক্ষের সমর্থকেরা বেশ কিছু ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটায়। এতে বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে জেলা শহর মাইজদীর সেনা ক্যাম্পের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। এ ছাড়া উপস্থিত হয় সুধারাম থানা পুলিশের একটি দল। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়া চলাকালে বাজারের দুটি দোকানে ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে জেলা সদরের হাসপাতালে ভর্তি করা মোহাম্মদ ইউসুফকে। তিনি বিএনপির উপজেলা শাখার সহসভাপতি নুরুল আমিনের অনুসারী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির উপজেলা শাখার সহসভাপতি নুরুল আমিন বলেন, আনোয়ার হোসেনের সমর্থকেরা তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। তবে সংঘর্ষের বিষয়ে যুবদলের সদর উপজেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বিএনপির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন বলেন, খলিফার হাট বাজারে স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। এটি খুবই সামান্য ঘটনা। স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে বিএনপির দলীয় রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপির জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মিষ্টি বিতরণ করা নিয়ে খলিফার হাট বাজারে স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে তাঁরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হামলায় জড়িয়ে পড়েন। এতে ২-৩টি দোকান সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ককটেল বিস্ফোরণের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, বিস্ফোরণের কোনো আলামত ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post