সর্বোত্তম দানকারী ও হেদায়েতকারী মহান আল্লাহর জন্য যাবতীয় প্রশংসা । সন্তান দান করার মধ্যে দিয়ে তিনি আমাদের উপর বিরাট ইহসান করেছেন ।
আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, সর্বোত্তম মহা মানব মুহাম্মদ সাঃ হলেন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও রসুল ।
উত্তম বান্দাদের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে গিয়ে আল্লাহ বলেন “ যারা এভাবে দোয়া করে যে, হে আমাদের রব ! আমাদেরকে চক্ষু শীতলকারী স্ত্রী ও সন্তান দান করুন এবং পরহেজগার লোকদের জন্য আমাদেরকে আইকন বানিয়ে দিন ।”
সূরা আল ফুরক্বান ৭৪
প্রিয় মুসল্লী ভায়েরা !
আল্লাহ বলেন “ তিনি তোমাদেরকে আদেশ করেছেন আমানত দানকারীর নিকট তাঁর আমানত ফেরত দেয়ার জন্য । “
সূরা আন নিসা ৫৮
আলেমগণ বলেন “ আমানত প্রদানকারী হলেন আল্লাহ । বান্দার কাছে দেয়া আমানত সমূহের মধ্যে সন্তান সন্ততি অন্যতম একটি । তাঁদের সুন্দরভাবে লালন পালন, পরিচর্যা, ইসলামী শিক্ষা প্রদান মা বাবা’র উপর একটি বড় দায়িত্ব । সেখানে কোন ধরণের অবহেলা মেনে নেয়া হবেনা ।
কোন কোন জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন “ এক মূহুর্তের অবহেলা এক বছরের পরিশ্রমকে বর্বাদ করে দিতে পারে ।”
رسائل ابن حزم ٣٥٣/١
নামাজের ক্ষেত্রে সন্তানদের কোন ছাড় দেবেন না । পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকঠাক আদায় করছে কিনা হুশিয়ার থাকবেন ।
আল্লাহপাক তাঁর প্রিয় নবী সাঃকে বলেন “ আপনি আপনার পরিবারকে নামাজ আদায় করার আদেশ দিন এবং আপনিও নামাজের উপর অটল থাকুন ।”
সূরা ত্বহা ১৩২
মহানবী সাঃ বলেছেন “ তোমরা সন্তানদের নামাজ শিক্ষা দাও ।”
মুসনাদ আল বাজ্জার ৯৮২৩
সাইয়্যিদুনা ওমর রাঃ বলেন “ আমার দৃষ্টিতে তোমাদের জন্য সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো নামাজ । যে ব্যক্তি এর হেফাজত করেছে সে দ্বীনের হেফাজত করেছে । পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এটা নষ্ট করেছে সে অন্যান্য সব ক্ষেত্রে চরম উদাসীন ।”
মোয়াত্বা মালেক ৬/১
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট দুবাই’র সম্মানিত শাসক শায়খ মুহাম্মদ বিন রাশেদ হাফিঃ বলেন “ আমাদের আরবী ভাষা অত্যন্ত সৌন্দর্যময় । তাঁর সাহিত্যকথা নজিরবিহীন ।”
রেফারেন্স:
وكالة أنباء الإمارات
এ আরবী ভাষা আমাদের বাপ দাদাদের ভাষা । এ ভাষায় পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হয় । আমাদের সন্তানেরা স্কুলের পড়াশোনা ঠিকমতো করছে কিনা এবং আরবী ভাষা ও সাহিত্যে ইল্ম অর্জন কতোটুকু করছে ! বাড়ির কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করছে কিনা খবরগিরী করবেন ।
বিনা প্রয়োজনে সন্তানদের হাতে মোবাইল দেবেন না । মোবাইলে কি করে তা পর্যবেক্ষণ করবেন । খারাপ ছেলেদের সাথে মিশতে দেবেন না । নচেৎ সন্তান বর্বাদ হয়ে যাবে !
মহানবী সাঃ বলেছেন “ মানুষ তার বন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে থাকে । অতএব তার সংগে বন্ধুত্ব করছো ভেবে দেখো ।”
সুনানে আবু দাউদ ৪৮৩৩
ছোট্ট শিশুদেরকে ভালোবাসা ও স্নেহের মাধ্যমে শাসন করবেন । তাদের জন্য দোয়া করবেন ।
মহানবী সাঃ তার নাতি হাসান রাঃ ও হুসাইন রাঃ’র দোয়া করতে গিয়ে বলেন “ ইয়া আল্লাহ ! আমি এদের দু’জনকেই ভালোবাসি । আপনিও তাদেরকে ভালোবাসুন ।”
ছহীহুল বোখারি ৩৭৪৭
মহানবী সাঃ বলেছেন “ গুনাহগার হওয়ার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট যে, বান্দা অধীনস্থদের হক্ব নষ্ট করে ।”
সুনানে নাসাঈ ৯১৩১
প্রিয় রসুল সাঃ আরো বলেন “ তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল । প্রত্যেককে যার যার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে ।”
ছহীহুল বোখারি
ছহীহ মুসলিম
আর তাই সন্তানদের প্রতিপালন শিক্ষাদান সহ যাবতীয় বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলা প্রমাণিত হলে শাস্তি অনিবার্য !
উত্তম সন্তান রেখে গেলে আপনাদের জন্য দোয়া করতে থাকবে ।
মহানবী সাঃ বলেছেন “ বান্দা জান্নাতে প্রবেশের পর উচ্চ মর্যাদা ও স্থান লাভ করে অবাক হয়ে জানতে চাইবে এটা সে কিভাবে পেলো ? তাকে বলা হবে তোমার রেখে যাওয়া সন্তানের দোয়ার কারণে পেয়েছো । “
ছহীহুল বোখারি
ছহীহ মুসলিম
ইয়া আল্লাহ ! আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে আমাদের মা বাবাদের জন্য দোয়া করি আপনার সুমহান দরবারে । তাদের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিন । তাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন । তাদেরকে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করুন ।
আমাদের সন্তানদেরকে দ্বীনের পথে পরিচালিত করুন । পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী বানিয়ে দিন । তাদেরকে উত্তম চরিত্র দান করুন ।
দায়িত্ব পালনে আমাদের ব্যর্থতা ও দূর্বলতা মাফ করে দিন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু ।
Discussion about this post