জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার ২৭ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জেলা মহিলা দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
এতে সভাপতি করা হয়েছে আরজিনা পারভীন চাঁদনীকে। অভিযোগ রয়েছে, ইতোপূর্বে ৫ আগস্টের আগেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। এ ছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমও কিনেছিলেন।
কমিটির তালিকাসহ সভাপতি আরজিনা পারভীন চাঁদনীর আওয়ামী লীগের ফরম সংগ্রহ ও শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। এ ছাড়া কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন মোছা. নাছিমা বেগম। তিনি উপজেলার ৪ নম্বর বরিশাল ইউনিয়ন তাঁতী লীগের সভানেত্রী।
এ নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। আবার অনেকে জেলা মহিলা দলের সভাপতি শোভা আকতার টাকার বিনিময়ে এ কমিটি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মহিলা দলের সভাপতি শোভা আকতার বলেন, পলাশবাড়ী পৌরসভার বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত হয়ে এমন ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়েছে। তার মনোনীত সদস্যকে না রাখায় এমন ষড়যন্ত্র করছেন। যাকে সভাপতি পদ দিয়েছি সেখানের নেতাকর্মীদের মাধ্যমেই যাচাই-বাছাই করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তে পলাশবাড়ী থানা মহিলা দলের কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি এ্যাডভোকেট কাজী আমিরুল ইসলাম ফকু বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ইতোমধ্যে জেলা সভাপতি কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য জেলা মহিলা দলের সভানেত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
পলাশবাড়ী পৌরসভার বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির মহিলা দলের কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে ৫ আগস্টের পূর্বে দলের পক্ষে তাদের কোনো ভূমিকাই ছিল না। অবশ্যই অর্থের বিনিময়ে এ কমিটি দেওয়া হয়েছে। আরজিনা পারভীন চাঁদনী আওয়ামী লীগের কোনো নেত্রী ছিল কিনা তা জানা নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তার।
তিনি আরও বলেন, আমি কারো বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করিনি। এ কমিটি বাতিল করে প্রকৃত বিএনপি এবং ত্যাগী কর্মীদের সমন্বয়ে একটি শতভাগ স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের আহ্বান জানাই।
জানতে চাইলে আরজিনা পারভীন চাঁদনী বলেন, আওয়ামী লীগ করার প্রশ্নই ওঠে না। এরকম ছবি বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও রয়েছে। আমার বাবা ও পরিবার বিএনপির রাজনীতি করেন। অন্যদিকে কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিমা বেগমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ কমিটি ঘোষণার পর বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) জেলা মহিলা দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়।
Discussion about this post