কর্মক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনে একজনের মানসিক সমস্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত পরিশ্রম, কম পারিশ্রমিক, কর্মী ছাঁটাই, কর্মক্ষেত্রে অসন্তুষ্টি, সহকর্মীদের অসহযোগিতা, দারিদ্র্য ও সামাজিক অবস্থান হারানোর ভয়ে মূলত কর্মীরা বিষণ্নতায় ভোগেন।
কর্মক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনে একজন মানসিক সমস্যায় ভোগেন। আর তাঁদের মধ্যে গুরুতর মানসিক অসুস্থতার জন্য ৮০ শতাংশ কাজ হারান। এসব ব্যক্তি অনুপস্থিতি, কর্মদক্ষতা হ্রাস, কাজে কম মনোযোগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব এবং মনে রাখার সমস্যায় ভোগেন।
চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে হাসপাতালটির বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ ও ভর্তি রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত সমস্যায় চিকিৎসা নিতে এসেছে।
কর্মক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনে একজনের মানসিক সমস্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত পরিশ্রম, কম পারিশ্রমিক, কর্মী ছাঁটাই, কর্মক্ষেত্রে অসন্তুষ্টি, সহকর্মীদের অসহযোগিতা, দারিদ্র্য ও সামাজিক অবস্থান হারানোর ভয়ে মূলত কর্মীরা বিষণ্নতায় ভোগেন।
কর্মক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনে একজন মানসিক সমস্যায় ভোগেন। আর তাঁদের মধ্যে গুরুতর মানসিক অসুস্থতার জন্য ৮০ শতাংশ কাজ হারান। এসব ব্যক্তি অনুপস্থিতি, কর্মদক্ষতা হ্রাস, কাজে কম মনোযোগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব এবং মনে রাখার সমস্যায় ভোগেন।
চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে হাসপাতালটির বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ ও ভর্তি রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত সমস্যায় চিকিৎসা নিতে এসেছে।
এ ছাড়া সোমাটিক সিম্পটম ডিস-অর্ডার (মানসিক রোগের সমষ্টি), অবসেসিভ কমপালসিভ ডিস-অর্ডার (অবাঞ্ছিত চিন্তা-ভাবনা), বাইপোলার ডিস-অর্ডার (অতিরিক্ত উচ্ছ্বাসপ্রবণতা), সিজোফ্রেনিয়া (উদ্ভট চিন্তা, অসংগতিপূর্ণ কথাবার্তা) ও অন্যান্য সাইকোটিক ডিস-অর্ডার নিয়ে এসেছে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে ৭৪ হাজার ৭৪৪ জন। এর মধ্যে ছয় হাজার ৬৫৮ জন শিশু-কিশোর, যা ১০ শতাংশ। এদের বেশির ভাগেরই কনডাক্ট ডিস-অর্ডার বা আচরণগত সমস্যা।
দেশে কত মানুষ ভুগছে—এ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে গত পাঁচ বছরে কোনো জরিপ বা গবেষণা হয়নি। ২০২২ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল ঠিক করা হলেও এর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮.৭ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। শিশুদের মধ্যে এই হার ১২.৬ শতাংশ। এসব রোগীর মধ্যে চিকিৎসার বাইরে ৯৪ শতাংশ।
সরকারের সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশে মোট মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ আছেন ৩৫০ জন, অর্থাৎ প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে ০.১৭ জন। সাইকোলজিস্ট ৫৬৫ জন বা প্রতি লাখে ০.৩৪ জন, সাইকিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার সাতজন বা প্রতি লাখে ০.০০৪ জন। অকুপেশনাল থেরাপিস্ট ৩২৪ জন বা প্রতি লাখে ০.১৮ জন। নার্স ৭০০ জন।
দেশের এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ ১০ অক্টোবর পালিত হচ্ছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পৃথকভাবে সভা, সেমিনার ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য, অগ্রাধিকার দেওয়ার সময় এখনই’।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, উন্নত বিশ্বে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে গড়ে প্রায় ১০ শতাংশ কর্মী কেবল বিষণ্নতার কারণে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এতে বছরে গড়ে ৩৬ কর্মদিবস নষ্ট হয়। এসব রোগীর ৫০ শতাংশ চিকিৎসাসেবা নেন না। অনেক সময় মানসিক সমস্যার কথা মুখ ফুটে বললে চাকরি হারানোর ভয় থাকে। তবে কাজের চাপ, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা, উদ্বেগ, পরিবারে সময় কম দেওয়া ইত্যাদি কারণে নারী-পুরুষ উভয়ের ওপর মানসিক চাপ বাড়ে, যা কর্মদক্ষতা কমিয়ে দেয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মনোরোগবিদ্যা বিভাগের ফেজ বি রেসিডেন্ট ডা. নাহিদ আফসানা জামান বলেন, মানসিক রোগীদের মধ্যে ৯২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৯৪.৩ শতাংশ শিশু-কিশোর চিকিৎসার আওতায় আসছে না। চিকিৎসা শুরু হতেই গড় বিলম্ব হয় ২৪ থেকে ৩৬ মাস। গড় বিলম্বজনিত কারণে মানসিক রোগ চরম মাত্রা ধারণ করতে পারে এবং রোগীরা ভোগান্তির শিকার হয়।
Discussion about this post