‘কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম বড় একটি কারণ তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ ও অপব্যবহার। শুধু আইন প্রয়োগ নয় এটির প্রবণতা কমিয়ে আনতে দরকার ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি এবং সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা।’
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হওয়া চিটাগং ইউনিভার্সিটি এ্যারাবিক ডিবেটিং ক্লাবের (সিইউএডিসি) কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির কারণ নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওসমান মেহেদী।
ড. মোহাম্মদ ওসমান মেহেদী বলেন, জুনিয়র-সিনিয়র বিরোধ, তথ্য ও প্রযুক্তির অপব্যবহার, পারিবারিক বন্ধনের শিথিলতা, ত্রুটিপূর্ণ সামাজিকীকরণসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কিশোর অপরাধের মাত্রা বেড়েই চলছে। এ থেকে সবাইকে মুক্ত করতে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
এ সময় বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, আধুনিক বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া চলা সম্ভব নয়। তবে, এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে এটিকে ব্যবহার করতে হবে। নয়তো তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার ও এর অপরাধ বাড়তেই থাকবে দিনদিন।
তিনি আরও বলেন, এর থেকে পরিত্রাণের জন্য আমাদের ধার্মিকতা নৈতিকতার সাথে পরিচিত হতে হবে। পাশাপাশি প্রচলিত নারী, শিশু ও কিশোর অপরাধ আইনের মাধ্যমে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
‘তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণেই কিশোর অপরাধ বাড়ছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সরকারি দলে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দু’টি বিতার্কিক দল ফাইনাল রাউন্ডে অংশগ্রহণ করে।
সরকারি পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় বিতর্ক করেন সানজিদা আক্তার, মন্ত্রীর ভূমিকায় নোমান ইবনে মোসলেহ উদ্দিন এবং সংসদের সদস্য ভূমিকায় মুতাসিম বিল্লাহ।
বিরোধী পক্ষে বিরোধী দলীয় নেত্রীর ভূমিকায় বিতর্ক করেন নাদিয়া সুলতানা, উপনেতার ভূমিকায় রিয়াজ উদ্দিন এবং সংসদ সদস্যের ভূমিকায় আবু নাঈম জিহাদ।
প্রতিযোগিতায় অনলাইনে বিভিন্ন অপরাধ এবং অফলাইনের অপরাধ নিয়ে দুই পক্ষের বক্তাদের মধ্যে চলে নানা যুক্তিখণ্ডন। প্রতিযোগিতায় সরকারি দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বিরোধী দল এবং সেরা বক্তার পুরষ্কার পান বিরোধী দলের সংসদ সদস্য আবু নাঈম জিহাদ।
প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওসমান মেহেদী ও ক্লাবের সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী এবং বিজেতা দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্লাবের বর্তমান সভাপতি জাহিদ ফরিদ।
সভাপতির বক্তব্যে জাহিদ ফরিদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারসহ পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের অভাবে ‘কিশোর গ্যাং’ কালচার তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে টিকটক, লাইকি, ইমো, ফেসবুক, স্ট্রিমকার, মাইস্পেস, হাইফাইভ ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার কিশোর-তরুণদের বিপথগামী করে তুলছে। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
Discussion about this post