সর্ব প্রকারের প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য। যিনি নিজস্ব হিকমা সহকারে তাক্বদীর সৃষ্টি করেছেন এবং তাক্বদীরের ভালো মন্দের উপর সন্তুষ্ট বান্দার জন্য জান্নাত লিখে রেখেছেন।
আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রসুল।
হে আল্লাহর বান্দারা! আপনাদের প্রতি অসিয়ত করছি যে আল্লাহকে ভয় করুন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।
সূরা আত তাওবা ৭
হে ঈমানদারগণ! আমাদের জন্য সবচে’ বড় প্রাপ্তি হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
ঈমানের স্বাদ পেয়েছে সেই ব্যক্তি, যে রব হিসেবে আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট, দ্বীন হিসেবে ইসলামের উপর সন্তুষ্ট এবং রসুল হিসেবে মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর সন্তুষ্ট।
বলেছেন বিশ্বনবী (সাঃ)।
ছহীহ মুসলিম ৫৬
আল্লাহর সন্তুষ্টি হলো শান্তির প্রতীক। তাঁর যে কোন সিদ্ধান্তের উপর রাজী থাকা এবং কবুল করে নেয়ার মধ্যেই প্রশান্তির ফল্গুধারা। আর তাই সকল নবী রসুলগণ (আঃ) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সিরিয়াস ছিলেন।
সাইয়্যিদুনা যাকারিয়া (আঃ) দোয়া করতে গিয়ে বলেন — “ইয়া রব! আপনি তাঁর উপর সন্তুষ্ট হোন।”
সূরা মারইয়াম ৬
এখানে তিনি তাঁর সন্তান সাইয়্যিদুনা ইয়াহইয়া (আঃ)-এর জন্য দোয়া করেছিলেন।
আমরা কিভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি?
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জীবনের সকল উত্থান-পতন, সুখ-দুঃখকে পরীক্ষামূলক মনে করে এ সব মেনে নেয়ার মধ্যে দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব।
আমরা অনেক কিছুই অপছন্দ করি! অথচ তা’ আমাদের জন্য কল্যাণকর ছিলো।
আল্লাহ বলেন — “তোমরা এমন কিছু অপছন্দ করে থাকো যা’ তোমাদের জন্য কল্যাণকর।”
সূরা আল বাক্বারাহ ২১৬
আল্লাহর সন্তুষ্টির মধ্যে রয়েছে সর্ব প্রকারের কল্যাণ।
বলেছেন সাইয়্যিদুনা ওমর (রাঃ)।
ছহীহ মুসলিম ১২৯/১
“তুমি যা কিছু পেয়েছো, তা এমন নয় যে তুমি পেতেনা! কিন্তু পেয়েছো। পক্ষান্তরে তুমি যা’ কিছু পাওনি, তা’ এমন নয় যে তুমি পেতে বা তোমার জন্য ছিলো!”
এটার নাম তাক্বদীর।
বলেছেন বিশ্বনবী (সাঃ)।
সুনানে তিরমিজি ২৫১৬
সাইয়্যিদুনা আলী (রাঃ) বলেন — “যদি তুমি ধৈর্যধারণ করো, ভাগ্য তোমার অনূকুলে আসবে এবং তুমি পুরস্কৃত হবে। পক্ষান্তরে যদি অধৈর্য্য হয়ে যাও, তোমার উপর ভাগ্য আসবে প্রতিকূল হয়ে এবং তুমি পাপী হবে।”
ইবনু আসাকির ১৩৯/৯
“আমিই এই পার্থিব জীবনে তাদের মধ্যে জীবিকা বন্টন করে থাকি।”
বললেন মহামান্য আল্লাহ।
সূরা যুখরুফ ৩২
“তোমরা নিজেদের উপরের দিকে তাকাবেনা। বরং তোমাদের নীচের দিকে তাকাও। তোমাদের উপর আল্লাহর নেয়ামতকে ক্ষুদ্র মনে করবেনা।”
ছহীহুল বোখারি, ছহীহ মুসলিম
যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট থাকে আল্লাহ তার ভাগ্যে যা রেখেছেন তার উপর, তখন আল্লাহ তার জন্য বারাকাহ দান করেন।
বিশ্বনবী (সাঃ)।
সিলসিলাহ ছহীহা ১৬৫৮
মহানবী (সাঃ) বলেছেন — “যে ব্যক্তি রব হিসেবে আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট, দ্বীন হিসেবে ইসলামের উপর সন্তুষ্ট এবং নবী হিসেবে মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর সন্তুষ্ট, তার জন্য জান্নাত ওয়াজীব হয়ে যাবে।”
ছহীহ মুসলিম ১৮৮৪
ভোর বেলায় যে ব্যক্তি বলবে — “রব হিসেবে আমি আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট, দ্বীন হিসেবে ইসলামের উপর সন্তুষ্ট এবং নবী হিসেবে মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর সন্তুষ্ট,” আমি তার হাত ধরে জান্নাতে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিলাম।”
তাবরানী ৮৩৮
ইয়া আল্লাহ! তাক্বদীরের ভালো-মন্দ মেনে নেয়ার পর আপনার সন্তুষ্টি প্রার্থনা করছি।
এই দোয়া করেছিলেন প্রিয় নবীজী (সাঃ)।
সুনানে নাসাঈ ১৩০৫
ইয়া আল্লাহ!
আমাদের উপর আপনার সন্তুষ্টি বৃদ্ধি করুন।
আমাদের উপর সন্তুষ্ট হোন।
আমাদেরকে তাওফিক দান করুন যেভাবে আপনি পছন্দ করেন এবং সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন।
ইয়া আল্লাহ!
আমরা অসন্তোষ থেকে সন্তুষ্টি চাই।
আপনার শাস্তি থেকে পরিত্রাণ চাই।
আপনার যথাযথ প্রশংসা করতে অক্ষম।
আপনি আপনার প্রশংসার জন্য যথার্থ।
আমাদের মা-বাবাদেরকে ক্ষমা করে দিন।
তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন ইয়া রব।
আমিন।
এম কিউ এম সাইফুল্লাহ মেহরুজ্জামান
খতিব
আবদুল্লাহ আস সানি গভর্নমেন্ট জামে মসজিদ
সাইফ জোন, শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত