ঠিক যেদিন গর্ভে সন্তানের অস্তিত্ব পান, সেদিন থেকেই এক মায়ের জন্ম হয়। শুরুটা সেই সেদিন থেকেই। মায়ের মায়া-মমতা আর ভালোবাসায় বেড়ে উঠতে থাকতে সন্তান। ধীরে ধীরে পৃথিবীতে আগমনের সময় হয়। আর যখন অন্ধকার থেকে বেরিয়ে স্পর্শ পায়, তখন থেকে সন্তানের ভরসার একমাত্র মানুষ হলেন ‘মা’। যেকোনো বিপদে পৃথিবীর আর কেউ না থাকলেও পাশে থাকবেন মা। সন্তানের জন্য যুদ্ধ করবেন খালি হাতে, যার শক্তি ধারালো তলোয়ারের চেয়েও কোনো অংশ কম নয়। সেই মায়েদের জন্যই আজ বিশেষ একটি দিন।
প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালিত হয় ‘বিশ্ব মা দিবস’। আজকের দিনটি তাই সব মায়েদের জন্য উৎসর্গ করা।
তবে এ দিনটিতেই কেন ‘মা’ দিবস পালন করা হচ্ছে? তাহলে শুনুন সেই গল্প।
যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা আনা জারভিসকে তার মেয়ে অসম্ভব ভালোবাসতেন। ১৯০৫ সালে তিনি মারা যান। মাকে ভালোবাসায় স্মরণ করতে একটি দিন উৎসর্গ করতে চান মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস। ওই বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃদিবস হিসেবে পালন করেন।
১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
আনার মা ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা। সারাজীবন অনাথদের সেবা করে জীবন কাটিয়েছেন। তিনি মারা গেলে অনাথদের জন্য উৎসর্গিত জীবনের কথা অজানাই থেকে যায়।
লোকচক্ষুর আড়ালে কাজ করা মাকে সম্মান জানাতে উদ্যোগ নেন আনা জার্ভিস। সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় ‘মা দিবস’। ১৯১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যে মা দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।
এরপর ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সাথে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
Discussion about this post