দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়েই রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ ডিপো নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হচ্ছে।
পূর্বাচল চার নম্বর সেক্টরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পূর্বাচল শহর উন্নয়ন প্রকল্পের সাইট অফিসের কাছে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত বাণিজ্যিক প্লটের খোলা জায়গায় পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আজ বেলা ১১টায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রথমে তিনি উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর ভাষণ দেবেন সুধী সমাবেশে। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ। প্রস্তুত মঞ্চ, অপেক্ষা উদ্বোধনের। পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক ব্যানার-ফেস্টুনে সাজিয়ে তোলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে।
এক মাস আগে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সংযোজন হয়েছে উড়াল মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন-৬। যার পুরো সুবিধা না পাওয়া গেলেও কম সময়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও যাতায়াতে স্বস্তি এনেছে। উড়াল মেট্রোরেলের পাশাপাশি এবার পাতাল মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন-৬ এর কাজ শুরু হচ্ছে।
পাতাল ও উড়াল মিলে মেট্রোরেল লাইন-১ এর মোট দৈর্ঘ্য ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত পাতাল অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। অন্যদিকে নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত নির্মাণ হবে উড়ালপথ, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। পাতাল পথে স্টেশন হবে ১২টি এবং উড়ালপথে থাকবে ৭টি। উভয় পথে মোট ১৯টি স্টেশন হবে।
পুরো প্রকল্পটির কাজ ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যে প্যাকেজে সিপি-১ এর আওতায় ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়ন করার কাজটি শুরু হলো। যেখানে ডিপো নির্মাণ করা হবে সেখানে অনেক উঁচু-নিচু জায়গা আছে। সেগুলো ভরাট করার কাজটি শুরু হলো। তারপর সেখানেই ডিপো নির্মাণ করা হবে। জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের জয়েন্ট ভেঞ্চার রাজধানীর এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়নের কাজ করবে।
পাতাল মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং বাকিটা বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে।
ডিএমটিসিএলের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, প্রকল্পটি শেষ হলে এই রুটে প্রতিদিন ৮ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে ২০ মিনিট। পাতাল রেলের জন্য কেনা হবে ২৫টি ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনে কোচ থাকবে আটটি করে। একেকটি ট্রেন সেটে একসঙ্গে ৩ হাজার ৮৮ যাত্রী পরিবহন করা যাবে।
এমআরটি লাইন-১ এর সঙ্গে অন্যান্য লাইনের সংযোগ হবে। নতুন বাজার মেট্রোরেল স্টেশনে এমআরটি লাইন-১ ও এমআরটি লাইন-৫; নর্দার্ন রুটের মধ্যে এবং আফতাব নগর মেট্রোরেল স্টেশনে এমআরটি লাইন-১ ও এমআরটি লাইন-৫; সাউদার্ন রুটের মধ্যে আন্তঃলাইন সংযোগ থাকবে। কমলাপুর মেট্রোরেল স্টেশনে এমআরটি লাইন-১, এমআরটি লাইন-২, এমআরটি লাইন-৪ এবং এমআরটি লাইন-৬ এর মধ্যে আন্তঃলাইন সংযোগ থাকবে।
Discussion about this post