সৌদি প্রবাসী স্বামীর প্রায় তিন কোটি টাকা ৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে বাড়ির নিমার্ণ শ্রমিক প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সোনাবালুয়া গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়ার মেয়ে দুই সন্তানের মা সাবিনা রহমান ।
নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের কুলাসিন গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী জয়নাল আবেদীন। একই ইউনিয়নের সোনাবালুয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে সাবিনা রহমানের সাথে ২০১০ সালে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ের কিছুদিন পর জয়নাল আবেদীন তার স্ত্রী সাবিনা রহমানের নামে বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামে একটি জমি ক্রয় করে টিনশেড ঘর তৈরি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাদের ঘরে আসে এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান।
সর্বশেষ গত পাঁচ বছর আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন জয়নাল। নিজের স্বপ্নের একটি বাড়ি করার লক্ষ্য নিয়ে স্ত্রীর নামে পাঠাতে থাকেন লাখ লাখ টাকা। তার পাঠানো টাকায় গত বছর ওই বাড়িতে একটি তিন তলা বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু করেন। জয়নাল আবেদীন প্রবাসে থাকায় কাজের দেখাশোনা করেন সাবিনা রহমান। বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজের দায়িত্ব নেন থোল্লাকান্দি গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম। স্বামীর অনুপস্থিতিতে বিল্ডিং-এর নিমার্ণ শ্রমিক নজরুল ইসলামের সাথে সাবিনার গড়ে ওঠে পরকীয়া সম্পর্ক।
সন্তানের এমন অপকর্মের ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন সাবিনার বাবা বাচ্চু মিয়া। ঘটনার সত্যতা তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি আমার মেয়ে সাবিনা রহমান তার নাবালক দু’সন্তান রেখে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা ৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, জমি বিক্রির নগদ ৪২ লাখ ও বাড়ির কাজের ২৮ লাখ মোট ৭০ লাখ নগদ টাকা এবং তার একাউন্টে থাকা স্বামীর পাঠানো প্রায় দু’কোটি টাকা নিয়ে বাড়ির নিমার্ণ শ্রমিক নজরুলের সাথে পালিয়ে যান।
প্রবাসী জয়নাল আবেদীন একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, আমি ২৪ বছর ধরে বিদেশে আছি। সংসার করতে গিয়ে আমার সারা জীবনের সঞ্চয় সরল-বিশ্বাসে বউয়ের নামে দিয়ে আমি আজ প্রতারিত হয়েছি, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি, আমার দু’টি নাবালক সন্তানকে এতিম করেছে। এই ঘটনায় আমি সাবিনার ও নজরুলের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। যাতে করে কোনো প্রবাসী আমার মতো আর প্রতারিত না হন।
শ্রমিক নজরুলের বাবা কুদ্দুস মিয়া জানান, তার ছেলে কাঠ ক্রয় করার কথা বলে ২২ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি।
স্বামীর আলিশান বাড়ি-ঘর ও দু’সন্তান রেখে স্বামীর টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে প্রবাসীর স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সাবিনা যেমন দুই সন্তানের মা তেমনি নজরুল ইসলামও এক স্ত্রী ও দুই সন্তানের বাবা।
মেয়ের বাবা বলেন, শ্যামগ্রাম সোনালী ব্যাংক থেকে নজরুলের নামে ২০ লাখ টাকা নরসিংদী ইসলামী ব্যাংকে ট্রান্সফার করার সত্যতা আমরা পেয়েছি। জয়নাল আমার মেয়েকে অনেক বিশ্বাস করতো। এই ঘটনার সংবাদ পেয়ে জয়নাল বিদেশে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার নাবালক দু’সন্তান দিনরাত কেঁদেই চলছে মায়ের জন্য। তার কোনো সন্ধান না পাওয়ার কারণে গত ২৯ জানুয়ারি নবীনগর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।
Discussion about this post