রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ইউক্রেনের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা গড়ে তোলার অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষ থেকে ফোন করা হয়েছিলো সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আল-সউদ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কার্যকর শাসক মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের কাছে।
কিন্তু দুই জনই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে কথা বলতে অস্বীকার করে ফোন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচনায় সম্প্রতি আরো সরব হয়েছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রিয়াদ জানিয়েছে যে তাদের সাথে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক বাইডেনের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিথিল হয়েছে। ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধে তাদের হস্তক্ষেপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তারা আরো সহায়তার দাবি করছে। একইসাথে নিজস্ব বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচিতে সহায়তা এবং যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে চলমান বিভিন্ন মামলায় দায়মুক্তির দাবি জানিয়েছে সৌদি আরব।
২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে নির্বাসিত সৌদি সাংবাদিক ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশগজিকে হত্যাসহ আরো বেশ কিছু অভিযোগে মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে শুনানি হচ্ছে।
অপরদিকে আমিরাত জানিয়েছে, ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হাউছি বিদ্রোহীদের সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্লিপ্ততায় তারা উদ্বিগ্ন। একইসাথে ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তি পুনরায় কার্যকরের আলোচনায় তাদের উদ্বেগ রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন নিরাপত্তা শঙ্কাগুলোকে নজর দেয়া হয়নি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে ১৪ বছরের মধ্যে তেলের দাম সর্বোচ্চ দরে পৌঁছেছে। বর্তমানে প্রতি এক ব্যারেল জ্বালানি তেল এক শ’ ৩০ ডলারে (১১ হাজার এক শ’ ৫২ টাকা) বিক্রি হচ্ছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য তেলের উৎপাদন বাড়াতে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে অনুরোধ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে সৌদি ও আমিরাতি কর্মকর্তারা এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলছেন, এই বিষয়ে পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য বিশ্বে তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের সদস্যদের সাথে আলোচনা করতে হবে।
সূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
Discussion about this post