জলবায়ু প্রশ্নে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে উন্নত দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে এই আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে দুবাইয়ের ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে এই আহ্বান জানান তিনি।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আজ ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রাণ দিয়েছে। এই দিনে আমি উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার আহ্বান জানাই। উন্নত উৎপাদন, উন্নত পুষ্টি, উন্নত পরিবেশ, উন্নত জীবন গঠনে অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু স্মার্ট কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রযুক্তি উদ্ভাবনে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহযোগিতা করতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ভূমিকা খুবই কম, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি জলবায়ু ইস্যুকে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা বলে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এক সময়ের খাদ্য ঘাটতির দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন বাংলাদেশ ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করতে চায়। মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান ও ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এ প্রচেষ্টার অংশ।’
ইউএই ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সাথে জলবায়ু মোকাবিলায় বাংলাদেশ কাজ করবে বলে জানান মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এআইএম ফর ক্লাইমেট সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি যৌথ উদ্যোগ। গতবছর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত ২৬তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৬) আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু। ২০২১-২৫ মেয়াদে ৫ বছরব্যাপী এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো- জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় জলবায়ু স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি ও ফুড সিস্টেম উদ্ভাবনে/ইনোভেশনে বর্ধিত বিনিয়োগ, গবেষণা ও সহযোগিতা সম্প্রসারণ। প্রাথমিকভাবে এ খাতে ৪ বিলিয়ন ডলার বর্ধিত বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ বর্তমানে ৩৬টি দেশের সরকার ও ৭৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এআইএম’র অংশীদার।
মিটিংয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ মন্ত্রী মারিয়ম আলমেইরি, যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব এগ্রিকালচার থমাস জে ভিলস্যাক সভাপতিত্বে প্রায় ৩০টি দেশের কৃষিমন্ত্রী ও অন্যান্য বেসরকারি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।
Discussion about this post