পৃথিবীতে অনেক মহীয়সী নারী তাদের আত্মত্যাগের কারণে স্থান পেয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। নিজের সর্বস্ব দিয়ে আপনজনের সাথে থাকার হাজারো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মহীয়সী সে নারীরা। ফেনী সরকারী জিয়া মহিলা কলেজের স্নাতক (ডিগ্রী) পড়ুয়া জান্নাতুল ফেরদাউস তেমনই একজন। স্বামীর প্রতি তার ভালবাসা ও ত্যাগ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকার মত।
বিয়ে হয়েছে ৭ বছর আগে। বিয়ের অল্প কিছুদিনের মাথায় স্বামী আবদুল গনি আরিফের ধরা পড়ে জটিল কিডনী রোগ। গত চার বছর ধরে প্রতি সপ্তাহে দু’বার করে নিতে হচ্ছে ডায়ালাইসিস। এ কয়েক বছরে চিকিৎসার জন্য খরচ হয়েছে অর্ধকোটি টাকা। প্রতিক্ষণে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন স্বামী আরিফ। তবুও থেমে যেতে চায়না জান্নাত। নিজের একটি কিডনী দিয়ে হলেও স্বামীকে সুস্থ করতে চায় সে। আর কিছু নয় স্বামীর সাথে বাকিটা জীবন সে সুন্দর ভাবে কাটাতে চায়।
স্বামীকে বাঁচানোর তার এই চেষ্টায় এক মাত্র বাধা টাকা। সে নিজে স্বামীকে একটি কিডনী দিলেও তা ট্রান্সপ্লান্ট করতে ব্যয় হবে প্রায় ২৫ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে দীর্ঘ দিনের চিকিৎসায় খরচ হয়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা। এখনও প্রতি সপ্তাহে ডায়ালাইসিস ও ঔষধ খরচ মিলিয়ে ১০ হাজার টাকার উপর খরচ হয়। আত্মীয় স্বজন ও স্বামীর বন্ধু-সহপাঠীদের সহযোগিতা নিয়ে তিনি যোগান দিচ্ছেন এ খরচ। সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা পেলে স্বামীকে একটি কিডনী দিয়ে তা ট্রান্সপ্লান্ট করে সুস্থ করে তুলতে চায় জান্নাত।
জান্নাত বলেন, পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়। কোন ধরণের প্রেম ভালবাসায় তাদের বিয়ে হয়নি। ২০১৫ সালে বিয়ে হবার কিছুদিন পরেই স্বামীর কিডনী রোগ ধরা পড়ে। এরপর থেকে তা ধীরে ধীরে করুণ পরিণতির দিকে যেতে শুরু করে। গত চার বছর ডায়ালিইসিস দিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছে স্বামী। স্বামী অসুস্থ হওয়ায় দীর্ঘ প্রায় ৭ বছরের বৈবাহিক জীবনে তাদের কোন সন্তান হয়নি। পরিবারের সম্মত না থাকলেও জান্নাত স্বামীকে একটি কিডনী দিতে চান এবং বাকি জীবন স্বামীর সাথে থাকতে চান।
ফেনী পৌর শহরের মহিপাল মধ্যম চাড়িপুর এলাকার আব্দুল গনি আরিফ, ৩৪ বছরের টগবগে তরুণ। অথচ এই বয়সে তার শরীরের দু’টি কিডনিই প্রায় অকেজো।গত চার বছর ধরে তিনি নিয়মিত সপ্তাহে দু’টি ডায়ালাসিস নিয়ে বেঁচে আছেন।
কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায়, তার পরিবারের পক্ষে সেই ব্যয় বহন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তাই জীবন বাঁচানোর করুণ আকুতি নিয়ে আরিফ বলেন, সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে হয়তো সুস্থ হয়ে পৃথিবীর আলো উপভোগ করতে পারবো।
আরিফ বলেন, আমি ২০১৫ সাল থেকে কিডনির সমস্যায় ভুগছি। ২০১৫ সাল থেকেই আমি ঢাকা কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল থেকে ডা. হারুন আর রশিদ এবং ডা. সাকিবঊজ্জামান আরেফিনের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিয়ে আসছি। আমার দু’টি কিডনিই বিকল এবং আমি ডায়ালাসিসের মাধ্যমে বেঁচে আছি।
বর্তমানে ডাক্তারের পরামর্শ মতে আমার সুস্থ জীবনে ফিরে আসার একমাত্র উপায় হলো কিডনি প্রতিস্থাপন করা, যা অনেক ব্যয়বহুল এবং জটিল। আমার চিকিৎসার খরচ বহন করা আমার পরিবারের একার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
আরিফের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য একমাত্র উপায় কিডনি প্রতিস্থাপন। যার জন্য প্রায় ২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। তার স্ত্রী একটি কিডনি দান করতে রাজি হয়ে ফেনীর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু টাকার অভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরিফ চোখের পানি ছেড়ে বাংলানিউজকে বলেন, দিন দিন আমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে না পারলে, আমি আর বাঁচবো না।
বেঁচে থাকার জন্য তিনি সমাজের সবার কাছে ভালোবাসা ও চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চান।
আরিফকে সহযোগীতা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন ৮৮০১৮১৮৮২৫৬৩৫ এই নাম্বারে। পাঠাতে পারেন অর্থ সহায়তা উক্ত নাম্বারে রয়েছে বিকাশ ও নগদ একাউন্ট। এছাড়াও অর্থ সহায়তা পাঠোতে পারেন-
MD.ABDUL GONI, SONALI BANK, MOHIPAL BRANCH, FENI
ACCOUNT N0- 4010501004760 ..
ডালিম হাজারী, ফেনী থেকে: