করোনা মহামারিতে চলাচলে সীমাবদ্ধতা-নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দুর্যোগ, সংঘাত ও সহিংসতার কারণে বিশ্বব্যাপী অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার বিশ্ব অভিবাসন প্রতিবেদন ২০২২-এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক বিষয়গুলোকে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ২৮১ মিলিয়ন বা ২৮ কোটি ১০ লাখ। বৈশ্বিকভাবে অভিবাসী পাঠানোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। পাশাপাশি রেমিট্যান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অষ্টম বৃহত্তম দেশ।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেখা যায়, ২০২০ সালে বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা ৭ দশমিক ৪০ মিলিয়ন। বিদেশে বসবাস করেও এসব অভিবাসীরা বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, এ অভিবাসীরা ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন। যার ৭৩ শতাংশ এসেছে উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিল (জিসিসি) দেশগুলোতে কর্মরতদের কাছ থেকে। এ রেমিট্যান্স বাংলাদেশের জিডিপিতে ৬ শতাংশের বেশি অবদান রাখছে। তাছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দিক থেকে দেশের রেমিট্যান্সখাতের অবস্থান দ্বিতীয়।
দেখা গেছে, ১৯৭০ সালে আন্তর্জাতিক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৮৪ মিলিয়ন যা ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮১ মিলিয়নে। তবে অভিবাসীদের ধারাবাহিক প্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক অভিবাসীর সংখ্যা কম ছিলা।
আইওএম-এর মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিটোরিনো বলেন, মানব ইতিহাসে এর আগে এমনটা দেখা যায়নি। করোনার কারণে কয়েকশ কোটি মানুষ আটকা পড়েছেন। তারপরও লাখ লাখ বাস্তুচ্যুতির ঘটনায় বিপুল সংখ্যক মানুষ গৃহহীন হতে বাধ্য হন।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০ সালে বিশ্বে প্লেনের যাত্রী কমেছে ৬০ শতাংশ। ২০১৯ সালে যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন। ২০২০ সালে যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক দশমিক ৮ বিলিয়নে। একই সময়ে দুর্যোগ, সংঘাত ও সহিংসতায় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক ৫ মিলিয়নে। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৫ মিলিয়নে।
Discussion about this post