মোফাচ্ছেল হক শাহেদ
প্রবাস মানে কাজের মাঝে- একটু সময় খুঁজা;
একটু খাওয়া একটু ঘুম- আপনাআপনি বুঝা।
প্রবাসীদের এ অনুভূতির কথা কাকে বুঝালে যে তিনি বুঝবেন,আমার জানা নেই। প্রবাসীদের গা হতে ঝরে পড়া একেকটি ঘামের ফোঁটা দেশ ও দশের একেকটি স্বপ্ন পূর্ণ হয়ে থাকে। অথচ সে প্রবাসীরা দেশের মাটিতে অবতরণের সাথে সাথে প্রবঞ্চনার শিকার হতে হয়।
প্রবাস জীবনের শত গ্লানির পরে ছুটিতে দেশে ফিরার সময় আপনজনের চাহিদা মত পণ্য সামগ্রী সঙ্গে এনেও যখন পরিবারের হাতে তুলে দিতে পারে না,ঠিক তখনি প্রবাস জীবনকে ব্যর্থ মনে হয়।কিন্তু কেন ও কি কারণে, এবং সমস্যাটা কোথায় এ বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করতে গেলে প্রথমত বলতে হয় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ২০ জানুয়ারি শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও কর্মী প্রেরণ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশসমূহের সাথে সমঝোতা সৃষ্টি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে বাংলাদেশি কর্মী গমন শুরু হয়। শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিধি বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়’ নামে একটি পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করে। এ মন্ত্রণালয় গঠনের উদ্দেশ্য হলো নিরাপদ অভিবাসন, প্রবাসী ও বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিতকরণ, দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ ইত্যাদি। তবে এসব নিয়মনীতি কি কেবল কাগজে-কলমে? প্রবাসীদের সাথে করে আনা জিনিসপাতির ওপর কেন সাহেবদের কুদৃষ্টি পড়ে?তাহলে প্রশাসনের কাজটা কি এবং নিরাপত্তা কাকে বলে?এসব অগণিত প্রশ্নের জবাব দেয়ার লোকটি লুকিয়ে থাকেন কেন?
‘প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন অপরিহার্য।’ হ্যাঁ,এক্ষেত্রে একটা বিষয় পরিস্কার হওয়া জরুরি আর সেটা হল একটি দেশের সরকার যদি একজন ব্যক্তিকে বুঝি এবং ঐ ব্যক্তির প্রতি যদি কোন শত্রুপক্ষ আক্রমণ করতে চায়,তিনি তার হস্তদ্বয় কিংবা শারীরিক অঙ্গ-ভঙ্গিতে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করবেন;তদ্রূপ আমি মনে করি প্রশাসন হচ্ছে সরকারের অঙ্গভঙ্গি, আর দৃষ্টিভঙ্গি যা,তা অঙ্গ ভঙ্গিরই অংশ।
সরকার মানেই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি বা অভিবাবক।গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা জনগণের হাতে। এক্ষেত্রে সরকার বলতে আমি দেশের নাগরিকদের বুঝি আর নাগরিকদের নিরাপত্তা,খাদ্য-বাসস্থান,
চিকিৎসা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা মুষ্টিমেয় এসব বিষয় সরকারের আওতায় নিয়ন্ত্রণাধীন না থাকলে অস্বাভাবিক অস্থিরতা বিরাজ করবে।
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রবাসে যারা আছেন তারাও কিন্তু আলাদা নন।তাদের প্রতি কোন অন্যায় হলে প্রশাসনকে এগিয়ে আসা উচিৎ,কিন্তু তা না করে উল্টো প্রশাসন কর্তৃক হয়রানির অভিযোগ নতুন নয় বাংলাদেশে।
দেশের ১৮ কোটি নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ প্রবাসে আছেন এবং এরাই কিন্তু অর্থনীতির চাকা সচল রাখার লক্ষ্যে নিজেদের জীবন বাজি রেখে দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছে।তাদের অবদান অনস্বীকার্য, তাদের কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মুটামুটি একটি ভাল অবস্থানে রয়েছে।তবুও প্রবাসীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য শুনতে হয়,কিন্তু কেন?এয়ারপোর্টে এতো হয়রানি কেন?ভিসা-প্রক্রিয়া কিংবা পাসপোর্ট রিনিউ করতে দালালদের খপ্পরে প্রতারিত হতে হয় কেন?দূতাবাস কতৃপক্ষ দেখেও কেন তা না দেখার ভান করে। পাসপোর্ট সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারে না।সফরকালীন হাজারও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়?সামান্য বিষয়ে কেন এত জবাবদিহিতা, কেন টাকাপয়সা দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করতে হয়?এসব বিষয়ে ক্ষমতাসীন নেতৃবৃন্দের কোন নজরদারি নেই কেন? আজকাল করোনা মহামারী সময়েও প্রবাসীরা বসে নেই, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে-ময়দানে কাজ করে যাচ্ছে,করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে লাশটি পর্যন্ত দেশে আনার সুযোগ নেই; পরিবারও প্রিয়জনের মুখ দেখা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। তবুও দেখলাম নিরাপত্তার নামে চাঁদাবাজি শুরু করে দিয়েছেন বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।গত বছরেও দেখলাম নতুন আদেশ জারি করে যাত্রী নিরাপত্তা ফি আর বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি নাম দিয়ে প্রবাসীদের পকেটমারার পায়তারা করলেন;খুব দুঃখজনক।
মনে রাখা দরকার,প্রবাসী বাংলাদেশিরা একেকজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা,প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিগত বছর গুলোতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে এবং রাখছে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাংলাদেশের অভিবাসীরা তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করে বার্ষিক ষোলো(১৬) বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স প্রেরণ করে থাকে, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে,কেবল সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশে ২০২০ সালে প্রবাসীরা ২৫০৭ দশমিক ৬৪ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। করোনা কালীন সময়ে অন্যান্যা দেশের তুলনায় অনেক বেশি।তবুও প্রবাসীদের প্রতি সুদৃষ্টি পড়ছে না।প্রতিনিয়ত তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।দয়া করে এবার থামুন,তাদের মনঃক্ষুণ্ণ করা থেকে বিরত থাকুন।না’হয় দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।বিদেশের প্রতি অনিহা বোধ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা।এখনো সময় রয়েছে,প্রবাসীদের নিয়ে ভাল কিছু চিন্তা করুন,তাদের মন উৎফুল্ল রাখার চেষ্টা করুন।বাংলাদেশ আর দেশের জনগণের সাথে প্রবাসীদের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতম। সুতরাং সাবধান হওয়া জরুরী।বেশি চাপাচাপি করা উচিৎ না।লেবু বেশি কচলাতে গেলে তিক্ততা বেড়িয়ে আসবে।প্রবাসীরা দেশ ও দশের কথা ভেবে সব মুখ বুঝে সয্য করে যাচ্ছে,এটাকে দুর্বলতা মনে করা বোকামি।
দীর্ঘদিন দুবাই শ্রমবাজার বন্ধ থাকার পরে যখন ভিজিট ভিসায় আসার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তখনই দেখা গেল দেশের স্বার্থলোভী এক শ্রেণীর মানুষের ধান্ধাবাজি।এদেরকে আরও প্রশাসন সহযোগিতা করতে দেখা যায়।মূলত এসব কারণে বিদেশে মাটিতে বাংলাদেশ শ্রম বাজার হারাচ্ছে। ভিজিট ভিসায় যারা যাচ্ছে তাদের কে এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্ট করেই যেতে হচ্ছে।এয়ারপোর্টে কিছু দালালের কারণে আজ শ্রমবাজার থমকে যাচ্ছে।দেশের সম্মানটুকু অসম্মানে পরিণত হচ্ছে।
চলতি বছর শুরুতে প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের কাছে ১০টি দাবি তুলেছেন সৌদি প্রবাসী সাংবাদিক ও সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট আব্দুল হালিম নিহন। মন্ত্রীর কাছে লিখিত দাবি হস্তান্তর করা হয়।যা হুবহু ছিল,-‘প্রবাসে দূতাবাসগুলোতে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন। বিপদগ্রস্ত, দুর্ঘটনাকবলিত, বঞ্চিত প্রবাসীদের চিকিৎসা-সেবা নিশ্চিত করা।গৃহকর্মীদের তদারকি, মন্ত্রণালয়ে ফলোআপ রিপোর্ট ইত্যাদির দায়বদ্ধতা সরাসরি সংশ্লিষ্ট এজেন্সির থাকতে হবে।অসুস্থ বিদেশফেরত প্রবাসীদের ফ্রিতে বিমানবন্দরে সুযোগ-সুবিধাসহ সরকারি চিকিৎসা প্রদান করা।সকল প্রবাসীদের বীমার আওতায় নিয়ে আসা, যাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা বীমার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে।বিদেশের মাটিতে নানারকম অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত দূতাবাসের মাধ্যমে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া।দেশে আসা প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে সু-নজর রাখা এবং দেশে প্রবাসীর পরিবারগুলোকে নানারকম অন্যায় অবিচার থেকে রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক নিরাপত্তা দেয়া।বিদেশে মৃত বাংলাদেশির লাশ দূতাবাসের মাধ্যমে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিনা খরচে প্রবাসীর লাশ বহনের ঘোষণা আমাদের একান্ত দাবি।বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো কার্গো মালামালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে, যার ফলে প্রবাসীরা যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছে তেমনিভাবে সরকার হারাচ্ছে তার রাজস্ব। এই বিষয়টির উপর ভালো নজর রাখা সময়ের দাবি।দেশে প্রবাসীর (সন্তান-সন্ততি) শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দিষ্ট কোটা ব্যবস্থা চালু করা।’
মন্ত্রী মহোদয় প্রস্তাব গ্রহণ করে বিবেচনাধীন রেখেছেন। কার্যকারিতা কখন দেখবেন প্রবাসীরা সেটাও অনিশ্চিত।
প্রসঙ্গক্রমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠে;দেশের ভাবমূর্তি সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করার জন্য সরকারের পদক্ষেপ কি হতে পারে?যেটা মনে হয়,দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রথমত সরকারের উচিত দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা,দুর্নীতি,চুরি-ডাকাতি দূর করা।এরপরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা। উন্নত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিকদের বিদেশ পাঠানো। রপ্তানি পণ্য ভেজাল মুক্ত করা।বহির্বিশ্বে আন্তর্জাতিক মানের যে খেলাধুলা হয়ে থাকে সেখানে খেলোয়াড়দের নিয়ে শক্তিশালী টিম গঠন করে তাতে অংশ নেয়া। আমরা জানি দেশের বাইরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীদের সুনাম রয়েছে,সুতরাং সেই মিশন চালু রাখা।চিকিৎসা সেবা উন্নত করা,গুনীজনের মূল্যায়ন করা ইত্যাদি।এসব ছোটখাটো অনেক বিষয় যা সরকার সদিচ্ছা করলে দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কিছু সেবা চালু করেছেন তা প্রশংসনীয়,যেমন অভ্যন্তরীণ ই-সেবাসমূহের মধ্যে রয়েছে,
প্রবাসীদের জন্য কল সেন্টার,ওয়েব মেইল,অনলাইন অভিযোগ,অনলাইন ভিসা যাচাই,এছাড়া প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার নামেও একটি সেবা চালু করেছেন।
কথা হল, এসব সেবা কারা নিচ্ছেন/পাচ্ছেন?
জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস থেকেও প্রবাসীদের অনেক সেবা দিয়ে থাকেন কিন্তু কিছু কিছু সেবার কথা প্রবাসীদের জানা থাকলেও অনেকেরই অজানা।যেমন,”বিদেশ গমনকারী কর্মীদের রেজিষ্ট্রেশন ও ফিংগার প্রিন্ট, প্রাক-বর্হিগমন ব্রিফিং, নিরাপদ অভিবাসন প্রক্রিয়া,বৈদেশিক চাকুরীর উপযোগী প্রশিক্ষণে উদ্ধুদ্ধকরন,প্রবাসে মৃত কর্মীর মৃত্যুর সংবাদ এবং লাশ দেশে আনা,প্রবাসে মৃত কর্মীর পরিবারকে আর্থিক অনুদান(লাশ পরিবহণ ও দাফন খরচ বাবদ),দালাল এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ক্ষতিপূরণ,বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি সংক্রান্ত তথ্য প্রদান,নারী অভিবাসন বিষয়ক তথ্য প্রদান, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সেবা সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান,
প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান,প্রবাসে আটক কর্মীদের মুক্তকরণ,আহত, পংগু ও অসুস্থ কর্মীদের দেশে ফেরত আনয়ন ও চিকিৎসা।”
উপরোল্লিখিত ধারাগুলো বাস্তবায়ন ক্ষেত্রে কতটুকু প্রবাসীদের সাহায্য সহযোগিতা করে আসছে প্রশ্নটা সকল প্রবাসীদের।কেননা সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া প্রবাসী ও অভিবাসীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।এ সব প্রবাসী ও অভিবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ প্রদর্শন করার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। যদিও বিমানবন্দরে প্রবাসীদের অযথা হয়রানি করলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ।
তিঁনি আরও জানান,’বিমানবন্দরে প্রবাসীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’তাঁর বক্তব্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে অনুরোধ করছি তিনি যেন মাঠে-ময়দানে একটু তদারকি করেন।বিশেষ করে বিমানবন্দরে প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক, বিভিন্ন যাত্রী কাউন্টার, কাস্টমস চেকিং পয়েন্টগুলোতে;প্রশাসনকে প্রবাসীদের প্রতি সহনশীল হওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
ব্যাংক প্রসঙ্গে,প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক, প্রবাসীদের জন্য বিশেষায়িত আর্থিক এ প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাকাল ২০১০ সালে।অতিমারী কোভিড-১৯ এর কারণে দেশে ফেরত প্রবাসীদের বিদেশে যেতে বা দেশে স্বাবলম্বী হতে স্বল্প সুদে সারা দেশে ঋণ সুবিধা দেয়ার কথা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। কিন্তু পত্রিকার রিপোর্ট অনুয়ায়ী দেখা যায় এর ব্যক্তিক্রম। জেলায় ঋণ সুবিধা চালু থাকলেও কর্মকর্তারা প্রবাসীদের বলছেন ঋণ দেয়া বন্ধ আছে। দিনের পর দিন ব্যাংকের শাখায় ঘুরতে হচ্ছে অসহায় প্রবাসীদের। এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
পরিশেষে বলতে হয়,প্রবাসীদের কোন সমস্যাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই, প্রবাসীদের সাথে দেশ উন্নয়নের সম্পর্ক রয়েছে।দেশ উন্নয়ন মানে জনগণের চাহিদা পূরণ,চাহিদার ঘাটতি দেখা দেয়া মানে সরকার অসুস্থ হয়ে পড়া। সুতরাং প্রশাসনের উচিৎ সরকারকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখা প্রবাসীদের প্রতি সুদৃষ্টির মাধ্যমে। এককথায় প্রবাসীদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান বিচক্ষণতার পরিচয়।।
___________________
মোফাচ্ছেল হক শাহেদ
১৫ নং-নোয়াজিষপুর, রাউজান, চট্টগ্রাম।
( ইউ.এ.ই প্রবাসী ) সেপ্টেম্বর ২০২১
Discussion about this post