মোফাচ্ছেল হক শাহেদ : একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধার অস্ত্র হচ্ছে মার্জিত মুখের ভাষা, তারপরে স্মার্ট চলাফেরা। বিদেশী কাস্টমারের সাথে তাদের ভাষায় পটুত্ব দেখাতে পারলে ব্যবসা বা চাকরিতে কোন লোকসান নেই বললেই চলে।কথোপকথনের পূর্বেকার বিষয় হল দু’জনের মধ্যে পরস্পর দৃষ্টি ক্ষেপণ; যাকে ইংরেজিতে ‘Eye contact’ বলা হয়। রেমিট্যান্স ভাইয়েরা প্রবাসে এসে ভাষা শেখার চেষ্টায় যেমন যত্নশীল,পাশাপাশি নিজেদের পোশাকআশাকেও যত্নশীল হওয়া উচিৎ;আমি মনে করি এটা ভাষায় চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি যদি বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না শিখেছেন,মনে করুন আপনি অনেক পিছিয়ে আছেন। কিছু বাংলাদেশি ভাইদের দেখে মূলত এই লিখনি; তারা কি আসলে বাংলাদেশ বিমানকেই বিদেশ মনে করেন! হয়তোবা তাই, না হয় সেজেগুজে এয়ারপোর্টে আসেন,বিমানে ওঠা-নামার সময় খুব করে সেলফি- স্ট্যাটাস দিয়ে থাকেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয় বিদেশ মাটিতে লুঙ্গী পরে শোডাউন দিতে দেখা যায়, এদিক-সেদিক রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করেন। এমনকি জুমআ’র দিন মসজিদেও নামাজে লুঙ্গী পরিহিত অবস্থায় অনেককেই দেখতে পাওয়া যায় । আরব দেশের স্থানীয় আরবিদের চোখে এটি একেবারেই অপছন্দের। ওদের চাহনি খেয়াল করলেই বুঝা যায় ওরা কতটুকু বিব্রত এবং বিরক্ত। এখনতো বড় মার্কেটেও লুঙ্গী পরে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ; তবুও কিছু ভাই বেশরমের মত লুঙ্গী পরে মার্কেট সম্মুখে ঘোরাঘুরি করে,দেখে মনে হয় লুঙ্গী বিজ্ঞাপনকারী।
লুঙ্গী পরতে বারণ করছি না, সবাই তো বাপের বেটা। লুঙ্গী তো আমারও আছে আমিও পরি; কিন্তু বাসার ভিতর, বিশ্রামের সময় কিংবা বিছানায় গেলে। ঢিলেঢালা পোশাকআশাক পরে ঘুমাতে যাওয়া ডাক্তারি পরামর্শ। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, সব সময় সবার সামনে নিজেদের ঐতিহ্য চলে না। নিজেদের ঐতিহ্য নিজেদের দেশে মানানসই। ভিনদেশীরা আমাদের ঐতিহ্যের কি বুঝবে! সঠিকভাবে তাদের সামনে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারছি না বলেই আমরা বাঙালিরা প্রতিনিয়ত হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি!
আমাদের স্বভাবগত কিছু পরিবর্তন দরকার। নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং স্মার্ট রাখতে হবে একইসাথে চারপাশ; তাহলেই দেশ বলেন আর বিদেশ বলেন বাঙালির চাহিদা বা মূল্যায়ন দিগুণ বৃদ্ধি সর্বত্রে ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে। লুঙ্গী পরা যাদের পছন্দের তারা দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না ।
লেখক : আরব আমিরাত প্রবাসী
Discussion about this post