রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বৃহস্পতিবার ১০ বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বাদী হয়ে ৯টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহহস্পতিবার রাতে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বাসে আগুনের ঘটনায় পল্টন থানায় ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯ জনকে। শাহাবাগ থানায় থানায় দায়ের করা ২ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪ জনকে। মতিঝিল থানায় দায়ের করা ২ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে ১ জন। বংশাল থানায় ১ মামলায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভাটারা থানায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও উত্তরা পূর্ব থানায় দায়ের করা ১টি মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টায় মতিঝিল, পল্টন, শাহজাহানপুর, শাহবাগ, ভাটারা, বংশাল ও উত্তরা এলাকায় একে একে ১০টি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এসব ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিনই ঘটে এ ঘটনা।
২০১৪-১৫ সালে দেশজুড়ে আগুন সন্ত্রাসের পর আবার একই কায়দায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের সময় শুরু হয়েছিল আগুন সন্ত্রাস। সে সময় শত শত যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। অনেকে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন।
গতকালের ঘটনার পর পুলিশ বলছে, বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। রাজধানীকে উত্তপ্ত করার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে আগুন দেওয়া হয়েছে। এদিকে, বাসে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন। এসব বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে নেতারা এই অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসের জন্য বিএনপিকে দায়ী করে বলেছেন, বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল এবং সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইলে আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে দাঁতভাঙা জবাব দেবে। অন্যদিকে, ঘটনার সঙ্গে বিএনপি কখনোই জড়িত নয় দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক বিবৃতিতে তিনি আগুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। আটক নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা সাতটি বাসের আগুন নিভিয়েছে। এ কারণে তাদের হিসাবে সাতটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া মতিঝিলের পূবালী পেট্রোল পাম্পের সামনে বিআরটিসির একটি দোতলা বাস, উত্তরার আজমপুরে ও নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের বিপরীতে আয়কর বিভাগের বাসে আগুনের তথ্য তাদের কাছে নেই। কারণ, স্থানীয়রাই আগুন নিভিয়ে ফেলে।
Discussion about this post