কুমিল্লা মনোহরগঞ্জে করোনা নমুনা সংগ্রহকারী দলের উপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় একদল দূবৃত্ত। এতে দুই নারী চিকিৎসক লাঞ্চিত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বেলা ১২টায় উপজেলার বিপুলাসার ইউনিয়নের জাওরা গ্রামে।
ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী। মনোহরগঞ্জ থানার নাথেরপেটুয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরির্দশক মো.জাফর ইকবাল জানিয়েছেন, এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবসা গ্রহণের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটির সমন্বয়ক ডা.নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী জানান,আমাদের উপজেলার এক পজেটিভ রোগীর ১৮ দিন হয়ে গেছে। তাকে ১৪ দিন পরই সুস্থ ঘোষণা করার কথা।
এমন অবস্থায় আমাদের টিম লক্ষণ পুর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নাথের পেটুয়া নমুনা সংগ্রহ করতে যাওয়ার সময় আমি নির্দেশ দেই, যেহেতু ঐ এলাকার সামনে দিয়ে যাচ্ছে তাকে সুস্থ ঘোষণা করার আগে একটা নমুনা সংগ্রহ করে নিতে।
যেহেতু বৃষ্টি কাদা মাটিতে গাড়ি রোগীর বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারছে না, তাই রোগীকে তার গ্রামের পাশেই একটি স্কুল মাঠে আসতে বলা হয়।
রোগীকে মাস্ক গ্লাভস পড়ে হেঁটে একা আসতে বলা হয়। সে সেভাবেই আসে। নমুনা সংগ্রহের সময় স্থানীয় একদল দূবৃত্ত আমাদের করোনা নমুনা সংগ্রহকারী টিমকে ঘিরে ধরে। দূবৃত্তরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বলে, কার পারমিশনে এখানে নমুনা সংগ্রহ করতে এসেছে? আমাদের এই টিমে ডা. নওরিন ও ডা. নাঈমা নামে দুজন মহিলা ডাক্তারসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা ছিলো। দৃবৃত্তরা তাদের লাঞ্চিত করে। দুই মহিলা চিকিৎসকদের রক্ষার চেষ্টা কালে স্বাস্থ্য সহকারীকেও তারা মারার জন্য উদ্যত হয়।
পরবর্তীতে প্রশাসনসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে সরকারী কাজে বাঁধা প্রদান ও করোনা সংক্রমন রোগ প্রতিরোধে বাঁধা দানের অভিযোগে মামলা করা হবে বলে উপজেলার এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন জানান,একজন করোনা পজেটিভ রোগীকে প্রকাশ্য জায়গায় নিয়ে আসার জন্য স্থানীয় কিছু তরুণ প্রতিবাদ জানিয়ে হৈ চৈ করেছে। পরে পুলিশ যাওয়ার কথা শুনে তারা চলে গেছে। এখন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা যদি মামলা করেন তাহলে তদন্ত করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমএ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা.জসিম উদ্দিন বলেন,ঝুঁকি আছে জেনেও আমাদের দুই সহকর্মী তার সহকারীদের নিয়ে মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য একেবারে তৃনমুল পর্যায়ে গিয়ে যখন লাঞ্চনার শিকার হবে তখন এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। করোনার নমুনা সংগ্রহ করতে যাওয়া টিমের উপর যে সকল দূবৃত্ত হামলা করেছে অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
Discussion about this post