করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ঈদের সময় বন্ধ ছিল গণপরিবহন চলাচল। দুদিন আগে থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে গ্রামে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তারপরও ঈদের আগে-পরে ১৩ দিনে ১৪৯ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছন ২৮৩ জন। রেল ও নৌ পথে ঈদযাত্রায় আরো ১৭ জনের প্রাণ গিয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি সংগঠনের ‘ঈদযাত্রা দুর্ঘটনা প্রতিবদন-২০২০’- এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংগঠনটির ‘সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল’ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণপরিহন বন্ধ থাকলেও এবারের ঈদের আগে-পরে সড়ক দুর্ঘটনা ছিল অতীতের তুলনায় বেশী। ১৯ থেকে ৩১ মে ১৩ দিনে ১৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন নিহত ২৮৩ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয় ২৫ মে। সেদিন ২০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়, আহত হন ২৪ জন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ঈদের দিন ২৪ মে। সেদিন ছয়জনের মৃত্যু হয়। যাত্রী কল্যাণে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের ১৮ জন নারী ও ১২ জন শিশু।
করোনার কারণে ঈদের আগে-পরে দুই মাসেরও বেশি সময় যাত্রীবাহী বাসসহ গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এবারের ঈদযাত্রায় সবচেয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। ১৪৯ দুর্ঘটনার ৩৫ ভাগ কারণ এই দ্বিচক্রযানটি। ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে ট্রাক, পিকআপ, কভার্ডভ্যানের মতো পণবাহী যানবাহনে।
প্রতিবেদন প্রকাশকালে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সাধারণ ছুটি বা লকডাউনে দেশে গণপরিবহন বন্ধ ছিল, ৯০ শতাংশ যাত্রীর যাতায়াত বন্ধ থাকলেও সেই তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। ব্যক্তিগত যানবাহনের চালকদের প্রশিক্ষণ জরুরি। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে মোটরসাইকেল বেপরোয়া চলেছে। তাই দুর্ঘটনার বড় কারণ মোটরসাইকেল। অধিকাংশ মৃত্যুর কারণ মোটরসাইকেল দুঘর্টনা। মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনার শিকারদের বড় অংশ তরুণ। তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, সচেতন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারি অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ, ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টারের চেয়ারম্যান নুর নবী শিমু, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন প্রমুখ।
Discussion about this post