করোনায় সুস্থ হয়ে মায়ের কোলে ফিরল ভৈরবের ১৫ মাসের কন্যা শিশু আমিরা তুননিছা (রোশনী)। গত সোমবার শিশুটির করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট এলে ১২ দিন পর মায়ের কোলে ফিরলো। গ্রহণ করলো মায়ের মাতৃছায়া। শিশু সুস্থ হয়ে ফিরে আসায় আতঙ্ক থেকে মুক্তি পায় মা-বাবা।
শিশু রোশনীর মায়ের নাম জেসমিন আক্তার এবং বাবা মো. সেলিম মিয়া। তারা দুজনই ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। শিশুটির আগে তার মা-বাবা দুজনই করোনায় আক্রান্ত হয়। তাদের সংস্পর্শে থাকায় শিশুর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিলো।
গত ১৯ এপ্রিলে বাবা সেলিম মিয়া ও ২১ এপ্রিলে মা জেসমিন আক্তারের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর শিশুটির করোনা পরীক্ষা করা হয়। এরপর ৩০ এপ্রিল তারও পজিটিভ রিপোর্ট এলে তারা আতঙ্কিত হয়ে যায়। শিশুটি তাদের সংস্পর্শে থাকার কারণেই করোনায় আক্রান্ত হয়।
তারপর শিশুটিকে মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে গত ১ মে ভাইয়ের মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এর আগে মা-বাবাকে স্থানীয় ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসা শেষে গত ৪ মে তাদের দুজনের (মা-বাবা) নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে তারা সুস্থ হয়ে ফিরেন। গত ১২ মে সোমবার রাতে ১২ দিন পর মঙ্গলবার সকালে শিশুটিকে মায়ের কাছে বাসায় আনা হয়। এখন মা-বাবা ও তাদের শিশু সন্তান
তিনজনই করোনা মুক্ত হলো।
শিশুটির বাবা মো. সেলিম মিয়া জানান, আমরা দুজনই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে মানুষদের সেবা দিয়েছি। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সন্তানসহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। হাসপাতালে কাটানো দিনগুলে খুবই আতঙ্কে ছিলাম। আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে আমার মেয়ে শিশু আমাদের কাছে ফিরে এসেছে। আমরা শিশুটিকে কাছে পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছে। ১২ দিন পর শিশুটি তার মায়ের মায়ের স্তন পান করলো ।
উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, শিশু রোশনীর মা বাবা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের কন্যার শরীরে ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছিলো। ভৈরবের হাসপাতালের ৮ জন ডাক্তারসহ ২২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মধ্য শিশুটিও ছিল।
ভৈরবে একমাত্র শিশু রোশনী করোনায় আক্রান্ত হয়। এতে আমরাও চিন্তিত ছিলাম। শিশুটির মা- বাবা হাসপাতালে মানুষের সেবা করতে গিয়েই ডাক্তারসহ ২২ জন আক্রান্ত হয়েছিল। এখন সবাই করোনা মুক্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
Discussion about this post