গাইবান্ধায় টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করছেন আবদুল কুদ্দুস মিয়া (৮৩) নামে এক মুক্তিযোদ্ধা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সান্তাহার-লালমনিরহাট রেলওয়ের গাইবান্ধা শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়াম মাঠ সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মুক্তিযোদ্ধার আবদুল কুদ্দুস ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের চণ্ডিয়া গ্রামের মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় হানিফ মিয়াপাড়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আবদুল কুদ্দুস মিয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ৪১ ব্যাটালিয়নের ১১ নং সেক্টর থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আবদুল কুদ্দুস মিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার আলসার ও গ্যাস্টিক রোগে ভুগছিলেন। অভাবের সংসারে টাকার অভাবে নিজের চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কেউ তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসেনি। তার দুই ছেলে মিজানুর ইসলাম ও মাইনুল ইসলাম দিনমজুরের কাজ করেন। পরের জমিতে কাজ করে যে টাকা পান তাতে তাদের পক্ষে বাবার চিকিৎসার করা সম্ভব নয়।
সংসারে অভাবের কারণে আবদুল কুদ্দুস মিয়া স্থানীয় মিয়াপাড়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব নেন। কিন্তু দিন দিন তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিনি মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব ছেড়ে পাগলের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেও চিকিৎসার টাকা যোগাতে পারেননি।
মঙ্গলবার (৪ ফ্রেবরুয়ারি) বিকেলে আবদুল কুদ্দুস মিয়া ফুলছড়ি উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গাইবান্ধা শহরের কলেজপাড়ায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যান। পরে ওই বাসা থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার কথা বলে রওনা দেন। সবার অজান্তে তিনি গাইবান্ধা শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়াম এলাকায় একটি লোকাল ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরআগেও আবদুল কুদ্দুস মিয়া ওই এলাকায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
Discussion about this post