বিদায়ী বছরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার শিরোনাম হয়ে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী আলোচিত নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা।
ওই বছরের ৬ এপ্রিল অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা ৬ মাসে নিষ্পত্তি হয়। ২৪ অক্টোবর ১৬ আসামীর সবাইকে মৃত্যুদন্ড দেন আদালত। যা দেশের বিচারাঙ্গনে নজিরবিহীন। ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার কার্যালয়ে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি যৌন হয়রানীর শিকার হন।
এ ঘটনায় তার মা শিরীন আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ সিরাজকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রেরণ করে। ঘটনায় সিরাজের পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। সিরাজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে রাফির পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করে। একপর্যায়ে ৬ এপ্রিল পরীক্ষা কক্ষ থেকে ডেকে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। তার শোর চিৎকারে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারী ও পুলিশ এগিয়ে এসে উদ্ধার করে দ্বগ্ধ রাফিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের বিছানা থেকে নুসরাত বিচার চেয়ে গেছেন। ঘটনাটি সংবাদমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ৮এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য প্রথমে ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন পরবর্তীতে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত ঘটনাটি গড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে নুসরাতের পরিবারকে ডেকে নিয়ে বিচারের আশ্বাস দেন।
এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
Discussion about this post