পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে স্ত্রীকে নিয়ে সৌদি আরব যান মোহাম্মদ শাহজালাল। কোনো ঝামেলা ছাড়াই সস্ত্রীক হজ পালন করেন তিনি। গত ১৮ আগস্ট জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে তাদের দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু স্ত্রী ফিরলেও দেশে ফিরতে পারেননি শাহজালাল। গত ১৭ আগস্ট সহধর্মিণীকে নিয়ে দেশে ফেরার পথে সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহজালাল।
১৭ আগস্ট মক্কা থেকে বাসযোগে জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরপরই তার বুকে ব্যথা ওঠে। এরপর তাকে দ্রুত বাংলাদেশ হজ ক্লিনিকে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মক্কায় বাদশা ফয়সাল হাসপাতালে নেয়ার পথে শাহজালালের মৃত্যু হয়। বিমানবন্দরে বসে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ পান স্ত্রী। সৌদি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোনো হজযাত্রী মারা গেলে হজ মিশন বাংলাদেশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে লাশ সে দেশের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ফ্লাইটের সময় হওয়ায় শাহজালালের লাশ রেখেই কাঁদতে কাঁদতে ফ্লাইটে উঠে দেশে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তার স্ত্রী। পেছনে পড়ে থাকে সারা জীবনের স্মৃতি।
গত ১৭ আগস্ট সৌদি স্থানীয় সময় রাত আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে মো. শাহ জালাল নামে ওই হজযাত্রীর মৃত্যু হয়। চলতি বছর দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দরে পৌঁছার পর কোনো হজযাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম। সর্দি কাশিসহ ছোটখাটো অসুস্থতা ছাড়া শাহজালালের বড় ধরনের কোনো অসুখ ছিল না। ১৮ আগস্ট ভোর পাঁচটায় তার ফ্লাইট ছিল। বিমানবন্দরে কোনো ধরনের জটিলতা এড়াতে ১২ ঘণ্টা আগেই জেদ্দা বিমানবন্দরে আসেন। ১৭ আগস্ট জেদ্দা বিমানবন্দরে হজ টার্মিনালে নামার পরপরই অসুস্থতা বোধ করেন শাহজালাল। তাকে প্রথমে দ্রুত বিমানবন্দর হদ ক্লিনিক ও পরবর্তীতে মক্কার বাদশা ফয়সাল হাসপাতালে রেফার করা হয়।
বিমানবন্দরে কর্মরত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, বিমানবন্দরে তার মৃত্যু হয়। শাহ জালালের স্ত্রী আহাজারি শুরু করলে তাকে বলা হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মক্কায় বাদশা ফয়সাল হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর পবিত্র হজ পালনের আগে ও পরে সর্বমোট ৯৩ জনের মৃত্যু হয়ছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৯ জন ও নারী ১৪ জন। মক্কায় ৮২ জন, মদিনায় ১০ জন ও জেদ্দায় ১ জনের মৃত্যু হয়।
Discussion about this post