গুটিকয় মেডিকেল সেন্টার মালিকের সিন্ডিকেটে অসহায় হয়ে পড়েছে গালফ কো-অপারেটিভ কাউন্সিল (জিসিসি) অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারগুলো। ওয়াফিদ বা চয়েস স্লিপ পদ্ধতির পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছে প্রায় ৩০টি মেডিকেল সেন্টার। জিসিসির আওতাভুক্ত দেশের দুই শতাধিক বেশি মেডিকেল সেন্টারের মধ্যে মাত্র ওই ৩০টি সেন্টার ৯৫ শতাংশ মেডিকেল চেকআপ নিয়ন্ত্রণ করছে। এই ৩০ সেন্টারের মালিকও ঘুরেফিরে নির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে মেডিকেল চেকআপে জিজিসি নির্ধারিত সাড়ে ৮ হাজার টাকার পরিবর্তে কোনো কোনো শ্রমিকের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছেতারা সার্ভার ম্যানুপুলেট ও হ্যাংয়ের মাধ্যমে অন্য মেডিকেল সেন্টারকে যেমন বঞ্চিত করছে, তেমনি নিজেরা কোটি কোটি টাকা অবৈধ আয় করে সেটা বিদেশে পাচার করছে। সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাবেক গামকা বর্তমানে জিসিসি অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টার মালিকরা এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার কথা জানান। তারা সিন্ডিকেটের হোতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাদের লাইসেন্স বাতিল করার দাবিও জানান। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিকদের মেডিকেল চেকআপে অনিয়ম দূর করে সমবণ্টনের দাবি জানিয়েছেন।বিদেশগামী কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ জমা দিতে হয় দূতাবাস এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে। বিশেষ করে সৌদি আরবসহ মাধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ প্রয়োজন হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কয়েকটি মেডিকেল সেন্টার ভুয়া সনদ দেওয়াসহ নানা প্রতারণার ফাঁদ পেতে রমরমা বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। গামকার প্রবীণ সদস্যরা জানান, ‘সাবেক গামকা ও বর্তমানে জিসিসি অনুমোদিত সেন্টারগুলোর ৯৫ শতাংশ কাজ পাচ্ছে না। তারা দিনে চার-পাঁচটি করে মেডিকেল টেস্ট রিক্যুইজিশন পান। কোনোদিন মোটেও পান না। এতে তাদের ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতনও হয় না। অথচ কয়েকটি সেন্টার রাত-দিন মেডিকেল চেকআপ করেও কাজ শেষ করতে পারছে না।অথচ সব মেডিকেল সেন্টার আলফাবেটিক্যাল সিরিয়াল অনুযায়ী সমান সংখ্যক রিক্যুইজিশন পাওয়ার কথা। কিন্তু চক্রের সদস্যরা তাদের বঞ্চিত করে ওয়াফিদ পদ্ধতিকে ম্যানুপুলেট করে নিজেরা অবৈধভাবে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ছাড়া চক্রটি ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা যেমন রাজশাহী, কক্সবাজার, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলার মেডিকেল সেন্টারের নামে ওয়াফিদ বা চয়েস স্লিপ তুলে ঢাকায় মেডিকেল চেকআপ করাচ্ছে। আবার ওইসব টেস্ট রিপোর্ট আপলোড দেওয়া হচ্ছে ওই জেলা থেকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই শ্রমিকদের ফিটনেস সনদ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, জিসিসির নিয়ম অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি একটিমাত্র মেডিকেল সেন্টারের মালিক হতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে জিসিসিতে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের ২৫ থেকে ৩০টি পর্যন্ত মেডিকেল সেন্টার রয়েছে।
Discussion about this post