সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য তাঁর বিশাল নিয়ামত সমূহের উপর । সেই পবিত্র স্বত্বা তাঁর রসুল সাঃকে রাত্রে সফর করিয়েছেন এবং সুউচ্চ আকাশের উপর ভ্রমণ করান । তাঁর রসুলকে সাঃ বিরাট ও বিশাল নিদর্শন সমূহ দেখান ।
দরুদ ও সালাম নাজিল হোক বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত মহানবী মুহাম্মদ সাঃ, তাঁর পরিবার রাঃ, তাঁর সাহাবীগণ রাঃ, তাবেঈনগণ রাঃ সহ সমগ্র মুসলিম জাহানের উপর ।
হে ঈমানদারগণ ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো ।”
সূরা আত তাওবা ১১৯
প্রিয় ভায়েরা ! ইসলামের ইতিহাসে ইসরা ও মি’রাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । যেখানে কেবল বিশ্বাস আস্থা ও ঈমানের খুঁটি নিহিত ।
আল্লাহ বলেন “ নক্ষত্রের কসম যখন সে অস্তমিত হয় । তোমাদের সাথী পথভ্রষ্ট ও বিপদগামী নন । তিনি প্রবৃত্তির অনুসরণে কোন কথা বলেন না । যা’বলেন তা’ তাঁর কাছে প্রেরিত ওহী ।”
সূরা আন নাজাম ১-৪
মহানবী সাঃ বিন্দুমাত্র অসত্য বলেননি যা’ তিনি দেখেছেন সে বিষয়ে ।”
সূরা আন নাজাম ১১
মি’রাজের ঘটনা সত্যের বাহন ও বিশ্বাসের খুঁটি । আরবী ভাষায় বিশ্বাসের গভীর ও নিখুঁত সংবাদটিকে সিদ্ক ( صدق ) বলা হয় ।
মি’রাজের আগ পর্যন্ত মক্কার লোকেরা মহানবী সাঃকে আস্ সাদিকুল আমিন বলে সম্মোধন করতেন । যখনই তিনি মি’রাজের ঘটনা বর্ণনা করতে গেলেন তারা সবাই রসুলকে সাঃ বিশ্বাস করলেন না । উল্লেখ্য যে মি’রাজের রাতে ৫০ বছরের অধিক সময় তিনি সেখানে অতিবাহিত করেন ।
মহানবী সাঃ বলেন “ যখনই কোন এক রাত্রে আমাকে মি’রাজে নিয়ে যাওয়া হলো এবং সকালে নিজেকে মক্কায় দেখতে পেলাম তখনই আমি আশংকা করছিলাম এবং আমি জানতাম যে মক্কার লোকেরা আমাকে মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করবে !”
সিলসিলাহ ছহীহা ৩০২১
স্বয়ং আল্লাহ যেখানে রসুলকে সাঃ সত্যবাদী বলেন, সেখানে কে কি বললো তা নিয়ে আমরা কোন পাত্তায় দিইনা । আল্লাহ বলেন “ আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্যবাদী আর কে হতে পারে ?”
সূরা আন নিসা ৮৭
আল্লাহ বলেন “ হে ঈমানদারগণ ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাঃ আহবানে সাড়া দাও এমন বিষয়ের প্রতি যা তোমাদের বেঁচে থাকার বাহন ।”
সূরা আল আনফাল ২৪
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ বলেন “ মহানবী সাঃ বলেছেন ‘ ঐ স্বত্বার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ আমি মুহাম্মদের সাঃ মুখ থেকে সত্য ছাড়া কিছুই বের হয়না । “
সুনানে আবু দাউদ ৩৬৪৬
মহানবী সাঃ আরো বলেন “ তোমরা যদি চাও যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাঃ তোমাদেরকে ভালোবাসুক তা’হলে আমানত দারীর আমানত ফিরিয়ে দাও এবং যখনই কথা বলবে সত্য কথা বলবে ।”
সিলসিলাহ ছহীহা ৬/১২৬৫
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন সালাম রাদিয়াল্লাহু বলেন “ আমি যখনই রসুলের সাঃ চেহারার দিকে তাকাই অনায়াসে মন বলে উঠে যে এই চেহারা কখনোই অসত্য কথা বলতে পারেনা ।”
সুনানে ইবনে মাজাহ ২৬৪৮
সকল নবী রসুলদের আঃ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন “ আমি তাদের সত্য জিহ্বাকে সুউচ্চ করেছি ।”
সূরা মারইয়াম ৫০
মি’রাজ সংঘটিত হওয়ার পর লোকেরা সাইয়্যিদুনা আবু বকর রাঃকে বললেন “ তোমার বন্ধুর খবর শুনেছো ? তিনি বললেন কি ব্যাপারে ? লোকেরা বললেন তিনি নাকি গত রাত্রে সফর করেছেন !
জবাবে আবু বকর রাঃ বললেন “ যদি তিনি এমনটি দাবী করে থাকেন তা’হলে তা নিঃসন্দেহে সত্য । বরং এরচে’ আরো বিস্ময়কর তাঁর কাছে সকাল সন্ধ্যায় আসমান থেকে সংবাদ অবতীর্ণ হওয়াটা বিনা বাক্যে বিশ্বাস করি ।
সিলসিলাহ ছহীহা ৩০৬
আবু বকর রাঃ’র এ সাক্ষ্য প্রদানের কারণে আল্লাহ বলেন “ নবী সাঃ’র নিয়ে আসা সত্যের উপর যিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনিই সত্যিকার অর্থে পরহেজগারদের অন্তর্ভুক্ত ।
সূরা যুমার ৩৩
অনুরূপভাবে সকল সাহাবীগণ রাঃ প্রিয় রসুলকে সাঃ চরম বিশ্বাস করতেন । সাইয়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু হাদীস বয়ান করার সময়ে বলতেন “ মহা সত্যবাদী রসুল সাঃ বলেছেন “ ।
মহানবী সাঃ বলেন “ নিশ্চয়ই সত্যের মাঝেই রয়েছে প্রশান্তি ।”
সুনানে তিরমিযি ২৫১৮
মিথ্যাবাদী লোকদের শাস্তি সম্পর্কে মহানবী সাঃ বলেন “ আমি মি’রাজে দেখেছি যে এক ব্যক্তির নাক মুখ ফাটা ! জিজ্ঞেস করলাম এ লোকটির শাস্তির কারণ কি ? হযরত জিবরাইল আঃ আমাকে বললেন ‘ এ লোকটি সাত সকালে উঠে একটি মিথ্যা কথা বলে এবং তার মিথ্যা সংবাদটি মূহুর্তেই গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ।”
ছহীহুল বোখারি ৬০৯৬
আজকাল প্রযুক্তির যুগে ফেসবুক ইউটিউবে মানুষ মিথ্যা কথা পোস্ট করে এবং তা মূহুর্তেই সারাবিশ্বে ভাইরাল হয়ে যায় ! খবরদার ! সাবধান ! পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে ।
ইয়া আল্লাহ ! আমরা মহানবী সাঃ ‘র ইসরা ও মি’রাজকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি । প্রিয় নবীজীর সাঃ পথ অনুসরণে আমাদেরকে তাওফিক দান করুন ।
আমাদের মা বাবাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং তাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন । আমিন ।
Discussion about this post