মাওলানা ইমরান হোসাইন : ফিতরা মুমিনজীবনের অন্যতম আর্থিক ইবাদত। বছর ঘুরে আসে পবিত্র মাহে রমজান। মাসব্যাপী রোজা পালনের পর ঈদের দিন সুবহে সাদিকের সময় প্রত্যেক মুসলিমের ওপর আর্থিক এই ইবাদত ওয়াজিব হয়।
রোজা একটি দৈহিক ইবাদত হলেও তার পূর্ণতা সাধিত হয় সদাকাতুল ফিতর আদায়ের মাধ্যমে। আল্লাহর প্রতি অন্তরের ভয় থেকে দিনব্যাপী পানাহার ও স্ত্রী-মিলন থেকে বিরত থাকা রোজার মূল কাজ হলেও রোজাকে পূর্ণরূপে সৌন্দর্যমণ্ডিত করতে হলে আরও বহুবিধ শিষ্টাচার পালন করতে হয়। অশ্লীল ও অযথা কথা বলা থেকে বিরত থাকা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। কিন্তু ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বহু অযাচিত কর্মকাণ্ড রোজা অবস্থায় ঘটে যায়, সেসব থেকে পবিত্রতা পেতে সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব করা হয়েছে।
অন্যদিকে রোজার সিয়াম সাধনা শেষ হলেই আসে ঈদের আনন্দ। ঈদে মুসলিম সমাজের ঘরে ঘরে বয়ে যায় খুশির জোয়ার। কিন্তু মুসলিম সমাজের অভাবী, অসচ্ছল শ্রেণির ঘরে এই আনন্দের আলো নিষ্প্রভ হয়ে থাকে। হাসতে চাইলেও কান্নাই তাদের অনিবার্য নিয়তি হয়ে যায়। সেই সব দরিদ্র পরিবারের মুখে ঈদের দিনে হাসি ফোটাতে, ঈদের জামায়াতের আগেই সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাসূলুল্লাহ সা:।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: সাদাকাতুল ফিতর রোজাদারের অনর্থক ও অশ্লীল কাজের পবিত্রতাস্বরূপ এবং নিঃস্ব লোকদের জীবিকা হিসেবে ওয়াজিব করেছেন। যে ব্যক্তি তা ঈদের নামাজের আগে আদায় করবে, তা আল্লাহ তাআলার কাছে মকবুল সদকা হিসেবে পরিগণিত হবে। আর যে ব্যক্তি তা ঈদের নামাজের পর আদায় করবে, তা সাধারণ দান হিসেবে গণ্য হবে। (আবু দাউদ ১৬০৯)
এতিম ও গরিব শিক্ষার্থীদের দ্বীনি শিক্ষাদানের ব্যবস্থাপনাকারী মাদরাসাগুলোতে সদাকাতুল ফিতর প্রদান করলে, দারিদ্র্যবিমোচনের পাশাপাশি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠায়ও সাদাকাতুল ফিতরের মাধ্যমে অবদান রাখা যায়।
Discussion about this post